বক্তব্য রাখার সময় করতালির শব্দ না পেলে তিনি কতটা বিরক্ত বোধ করেন, তা সকলেই জানেন। কিন্তু করতালি তো দূরের কথা। এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুষ্ঠানে লোক আনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের। আগামী ১২ জানুয়ারি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের ১৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান। সেখানেই হাজির থাকার কথা মোদীর। আর কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রকের অলিখিত নির্দেশ, প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে সিট খালি রাখা যাবে না। এতেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বন্দর-কর্তৃপক্ষের কপালে।
প্রসঙ্গত, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রায় ১০-১২ হাজার লোক ধরে। কলকাতা বন্দরের সমস্ত কর্মী এবং অফিসার হাজির হলেও পুরো হল ভরানো সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন বন্দরের কর্তারা। তাই প্রধানমন্ত্রীর সম্মান রক্ষার্থে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট ছাড়াও শিপিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া, ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ অথরিটি অফ ইন্ডিয়া এবং ড্রেজিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার মতো বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার কর্মী ও অফিসারদের প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে হাজির থাকার জন্য ফরমান জারি করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি, সাধারণ পোশাকে হাজির থাকবেন সিআইএসএফ কর্মীরাও। বিভিন্ন শিল্প ও বাণিজ্য সংস্থার প্রতিনিধিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। এমনকী দর্শকাসন ভরানোর জন্য কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে পণ্য খালাসের সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদার সংস্থাগুলির শরণাপন্ন হয়েছেন বন্দর-কর্তৃপক্ষ। প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে লোক আনার জন্য ভাড়া করা হচ্ছে লাক্সারি বাস। রাখা হচ্ছে পিকআপ ভ্যানও। এমনকী মোদীর ভাষণ শুনতে এলে মিলবে চা-বিস্কুট ও লাঞ্চ প্যাকেটও।
বন্দরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের প্রায় অর্ধেক আসন এমনিতেই খালি রাখতে হবে। তার পরেও স্টেডিয়ামের বাকি অংশ ভরানোর জন্য কম করে পাঁচ থেকে ছ’হাজার লোক লাগবে। সেখানে কলকাতা বন্দরের মোট কর্মীসংখ্যা মেরেকেটে তিন হাজার হবে। তার মধ্যে খুব বেশি হলে এক থেকে দেড় হাজার লোককে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে আনা যাবে।
জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থল ভরানোর জন্য আপাতত হলদিয়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বন্দরের কর্তারা। আয়োজকদের হিসেব অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের জন্য শুধু হলদিয়া থেকে প্রায় আড়াই হাজার লোক আসবেন। তাঁদের কলকাতায় আনার জন্য মোট ৫০টি লাক্সারি বাস ভাড়া করা হচ্ছে। বন্দরের আধিকারিকদের জন্য অফিসের গাড়ি ছাড়াও কয়েকশো পিকআপ ভ্যান ভাড়া করা হচ্ছে।
শুধু তাই নয়। এজন্য অফিসারদের কাছ থেকে ফোন নম্বর এবং পিকআপ পয়েন্ট অর্থাৎ কোথা থেকে তাঁরা গাড়িতে উঠবেন, তার তালিকা তৈরি করে রাখা হচ্ছে। শিপিং কর্পোরেশন এবং ইনল্যান্ড ওয়াটার ওয়েজ অথরিটির অফিসারদের কাছে নামের তালিকা সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে। তবে রবিবার ছুটির দিনে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান থাকায় শেষপর্যন্ত কতজন কর্মী সেখানে উপস্থিত হবেন, তা নিয়ে চিন্তিত উদ্যোক্তারা।