কথায় বলে, বজ্র আঁটুনি। মাছি গলারও উপায় নেই। ঠিক এমনই এক ছবি এখন দেখা যাচ্ছে কৃষ্ণ মেনন মার্গে। রাস্তার শুরুতেই ব্যারিকেড। দিল্লী পুলিশ, সিআরপিএফের কড়া নজরদারি। রয়েছে ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড। উদ্যোগ ভবন মেট্রো স্টেশনের কাছে যেখানে শেষ হয়েছে কৃষ্ণ মেনন মার্গ, সেখানেও ব্যারিকেড। স্বাভাবিক ভাবেই যান-চলাচল বন্ধ। এই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার কেন? কারণ এই রাস্তাতেই পড়ে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর বাসভবন। দেশজোড়া বিক্ষোভের আঁচ যাতে সেখানে না পড়ে, তাই আগেভাগেই নেওয়া হয়েছে এ হেন সতর্ক ব্যবস্থা।
প্রসঙ্গত, ১১ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল পাশ হওয়ার পর থেকেই গোটা দেশ জুড়ে শুরু হয়ে যায় আন্দোলন-বিক্ষোভ। যার আঁচ পড়ে রাজধানী দিল্লীতেও। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, জামিয়ানগর, সিলমপুর, জাফরাবাদ এলাকা। ইন্ডিয়া গেট, যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ শুরু হয়। তারপর আর দেরি করেনি দিল্লী পুলিশ। ৬এ, কৃষ্ণ মেনন মার্গের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বাড়ির সামনের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি দিল্লী মহিলা কংগ্রেস শাহের বাড়ির সামনে সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখালে ৫০-এর বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ। তারপরও দিল্লীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারাও সিএএ-র বিরোধিতায় বিক্ষোভ দেখানোর চেষ্টা করলে পুলিশ আটকে দেয়।
তবে এভাবে পুরো রাস্তা আটকে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রায় ২০ দিনের ওপর রাজধানীর এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা কৃষ্ণ মেনন রোডটি বন্ধ থাকার ফলে ভোগান্তি বেড়েছে বাস, ট্যাক্সি, অটোর নিত্যযাত্রীদের। সকালে অফিসটাইমের যানযটে নাজেহাল অবস্থা তো তৈরি হচ্ছেই। তার সঙ্গে মাঝেমধ্যেই লেগে রয়েছে নেতা-মন্ত্রীদের কনভয়ের আসা-যাওয়া। যে কারণ কয়েক কিমি ঘুরে অন্য রাস্তা দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। যার ফলে সকলেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলছেন, গত বছরের আগস্ট মাসে যখন কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার হয়েছে, তখনও এই রাস্তাটি বন্ধ করা হয়নি। এমনকী অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণার দিনও নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিরাপত্তার নামে আম আদমির ভোগান্তি না বাড়িয়ে দ্রুত রাস্তাটি খুলে দেওয়া উচিত বলেই মনে করেন তাঁরা।