এ যেন ‘ফেলো কড়ি, মাখো তেল’! একেবারে মুড়ি-মুড়কির মতো বিকোচ্ছে পুলিশের খাকি উর্দির তারা। আপনি কি মিরাটের সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট অফ পুলিশ হতে চান? তাহলে ঘুষ দিতে হবে ৮০ লাখ টাকা। আগ্রার এসএসপি? লাগবে ৫০ লাখ। বেরিলির? ৪০ লাখ। আবার বিজনৌরের এসএসপি হতে চাইলে দিতে হবে ৩০ লাখ! হ্যাঁ, এভাবেই যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে এখন বিক্রি হচ্ছে জেলা পুলিশের শীর্ষ অফিসারের পদ। কিনছেন ইউপি ক্যাডারের আইপিএস অফিসারেরা। ইতিমধ্যে মিরাটের এসএসপি পদের জন্য ৮০ লাখ টাকার চুক্তি ইতিমধ্যে চূড়ান্তও হয়ে গিয়েছে এক আইপিএস এবং এক দালালের মধ্যে। বিস্ফোরক এই অভিযোগগুলি করেছেন নয়ডার এসএসপি বৈভব কৃষ্ণ।
রাজ্য পুলিশের ডিজি ও মুখ্যমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সচিবের কাছে চিঠি লিখে এই দুর্নীতির বিষয়ে জানিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়। চক্রে জড়িত ৫ জন আইপিএস অফিসারের নামও উল্লেখ্য করেছেন ওই চিঠিতে। জানা গেছে, ওই ৫ আইপিএস অফিসারের মোবাইলে কথোপকথন রেকর্ড করে এবং হোয়াটস অ্যাপ কমিউনিকেশনে নজরদারি চালিয়ে এই সব তথ্য সামনে এসেছে। বৈভব তাঁর চিঠিতে এ কথাও উল্লেখ করেছেন যে, গ্যাংস্টার আইনের আওতায় তদন্তের সময় যে সব লেনদেনের তথ্য হাতে এসেছে, তাতে ২০১৯-এর ২৩ আগস্ট নয়ডায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি যে ডিজিপি ও মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের কাছে চিঠি লিখেছেন, সংবাদ সংস্থাকে নিজেই সে কথা জানিয়েছেন নয়ডার এসএসপি।
সেইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘এই চক্রের কথা মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনার পরেই সিন্ডিকেট আমাকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করতে আমার ছবি-সহ নোংরা তিনটি ভিডিও তারা সম্প্রচার করেছে।’ বৈভবের ইঙ্গিত, সিন্ডিকেটে জড়িত বেশ কয়েকজন ক্ষমতাশালী আমলা, রাজনীতিক ও কিছু সাংবাদিক। ফোনে এদের সব কথাবার্তা ও মেসেজ পুলিশের সাইবার সেলের লোকেরা উদ্ধার করছেন। এই তদন্ত চলার সময় পরিবহণ চক্রেরও খোঁজ মিলেছে। দেখা গেছে, গাজিয়াবাদের এক ব্যক্তি তাঁর আটক ট্রাক ছাড়ানোর জন্য বান্দা জেলার এক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসারকে টাকার অফার দিচ্ছেন। এমনকী কীভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে তা-ও রেকর্ডে ধরা পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এ বিষিয়টি সামনে আসতেই মুখ পুড়েছে যোগীর প্রশাসনের।