একটি ব্যানারের নীচে জোট বাঁধছে দেশের ১০০ টা সংগঠন। নতুন এই সংগঠনের নাম রাখা হয়েছে সংবিধানের প্রথম লাইন থেকে, ‘উই দ্য পিপ্ল অফ ইন্ডিয়া’। উদ্দেশ্য, সিএএ বিরোধিতা। সংগঠনে আছেন স্বরাজ অভিযান পার্টি বা এসএপি–র সুপ্রিমো যোগেন্দ্র যাদব, আসামের বিশিষ্ট সমাজকর্মী হর্ষ মন্দার, জেএনইউ–র প্রাক্তন ছাত্রনেতা উমর খলিদ, বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী তিস্তা সেতালভাড়, মানবাধিকার আইনজীবী মিহির দেসাই, সমাজকর্মী মেধা পাটেকর এবং গণেশ ডেভি। জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে শুরু হবে এই সংগঠনের বিক্ষোভ, প্রতিবাদ। দেশের প্রয়াত বিশিষ্ট মানুষদের জন্ম এবং মৃত্যুবার্ষিকীতে চলবে প্রতিবাদ। সাবিত্রীবাই ফুলের জন্মবার্ষিকী, তেসরা জানুয়ারিতে থেকে শুরু হবে বিক্ষোভ। আট জানুয়ারি সংগঠনের বামপন্থী শাখা ভারত বন্ধ–এর ডাক দিয়েছে। ১২ তারিখ, স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকী বা জাতীয় যুব দিবসে হবে বিক্ষোভ। ১৭ তারিখ রোহিত ভোমুলার মৃত্যুদিনকে সামাজিক ন্যায় দিবস হিসেবে পালন করবে উই দ্য পিপ্ল অফ ইন্ডিয়া এবং ১৪–১৫ তারিখ চৈত্র সংক্রান্তিতে হবে সব সম্প্রদায়ের মানুষের সমাবেশ।
যোগেন্দ্র সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, ‘সারা দেশে যাঁরা সিএএ, এনপিআর এবং এনআরসি–র বিরোধিতা করছেন তাঁদের সবাইকে আমরা আবেদন করছি এই ব্যানারে যোগ দিতে। এটাই আমাদের সংবিধানের প্রথম পংক্তি আর তাই এটার থেকে বড় কিছু হতে পারে না। ২৬ তারিখ জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং ৩০ তারিখ, মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যুদিনে মানব শৃঙ্খল তৈরি করব আমরা’।
হর্ষের মতে, এনআরসি বিক্ষোভ সাম্প্রদায়িক নয়, এতে সবাই যোগ দিতে পারেন। এনপিআর–র জন্য এনআরসি আরও ভয়ানক রূপ নেবে কারণ তাতে সরকার অনায়াসে ‘সন্দেহভাজন নাগরিক’ বলে যে কাউকে ধরতে পারে। তিনি আরও বললেন, সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআর দেশের মুসলিমদের বছরের পর বছর অনিশ্চয়তার মধ্যে ছুড়ে ফেলা। দেশবাসী সরকারের বিভাজন ছক ছুড়ে ফেলে দিয়েছে বলে উল্লেখ করে তিস্তা বললেন, ‘জরুরি অবস্থার পর এভাবে নাগরিকদের যোগদান আমি আর দেখিনি।’
উমর খলিদ বললেন, রাজ্য সরকারগুলিকেও তাঁরা চাপ দেবেন এনপিআর, এনআরসি–র বিরুদ্ধে আইনি প্রস্তাব আনতে। এনপিআর বয়কটের ডাক দেওয়া হবে। আইনজীবী মিহিরের মন্তব্য, এনপিআর এনআরসি–র আওতাতেই শুধু হতে পারে। প্রয়োজনে সেনসাস আইনের আওতায় সেনসাস করতে পারে সরকার। ভাষাবিদ গণেশ ডাভের মতে, দরিদ্ররাই সব থেকে বিপদের মুখে পড়বেন কারণ তাঁদের অনেকের কাছেই লিখিত প্রমাণ বা পরিচয়পত্র নেই।