কোনওরকম রাজনৈতিক পোস্ট করলেই আসামের সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে অসম সরকার। এমন তথ্য জানা গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও।
আসামের প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের ডিরেক্টরের পক্ষ থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারি কর্মীরা (স্থায়ী বা অস্থায়ী) যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনৈতিক পোস্ট করেন তাহলে সরকারি আইন মেনেই শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এজন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়া নজর রেখে চলেছে আসাম পুলিশের সাইবার সেল। সংশোধিত নাগরিক বিল (সিএএ) ও এনআরসি নিয়ে চলতি বিক্ষোভের জেরেই এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
আসাম সরকার হাতিয়ার করেছে ১৯৬১ সালের আসাম সরকারি পরিষেবা আইন। সেখানে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মীরা সরকার বিরোধী ও বিতর্কিত কাজে লিপ্ত থাকতে পারেন না। থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ৪ লক্ষ সরকারি কর্মী ১৮ ডিসেম্বর থেকে কোনও অফিসেই কাজে যোগ দিচ্ছেন না। কোথাও সরকারি কাজ হচ্ছে না। অচলাবস্থা চলছে রাজ্যে। এছাড়া আসামে নাগরিক বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত ৪ জন নিহত হয়েছেন। নতুন করে হিংসা না ছড়ালেও সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করে তীব্র প্রতিবাদ চলছে আসামে।
সূত্রের খবর, সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে চলতি বিক্ষোভে অসংখ্য সরকারি কর্মী রাজ্য সরকার বিরোধী অবস্থান নিয়ে প্রচুর কুৎসিত মন্তব্য, অশ্লীল পোস্ট করেছেন। সেগুলি হিংসা ও আক্রমণে ইন্ধন জুগিয়েছে। বহু সরকারি কর্মী নিজ নিজ এলাকায় সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসেও জড়িত ছিলেন। বহু সরকারি কর্মী নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে প্রচুর পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাই আসাম সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, হোায়াটসঅ্যাপে কোনও সরকারি কর্মী যদি কোনওরকম (নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির পক্ষে বা বিপক্ষে) ছবি, তথ্য, গ্রাফিক্স পোস্ট করেন তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে আসাম সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন অনুপমা বরদলৈ, জুবিন গর্গ সহ বহু সেলিব্রিটি। সরকার এভাবে বাক স্বাধীনতা রোধ করতে পারে না বলে টুইটও করেছেন বহু মানুষ।