সল্টলেক স্টেডিয়ামে বড়দিনে জমজমাট লড়াই। হাবাসের প্রশিক্ষণাধীন এটিকে বুধবার ঘরের মাঠে মুখোমুখি হবে বেঙ্গালুরু এফসি’র। কলকাতায় এটিকে এখনও অপরাজিত। যাদিও চলতি আইএসএলে তারা দু’টি ম্যাচ হেরেছে। বেঙ্গালুরু এফসি আবার এখনও পর্যন্ত কোনও অ্যাওয়ে ম্যাচ হারেনি। দুই দলের কোচই স্প্যানিশ। তাই যুবভারতীতে আজ উপভোগ্য ম্যাচ হবে বলে ফুটবলপ্রেমীরা আশা করতেই পারেন। এটিকে’র শেষ হোম ম্যাচে প্রায় ৩০ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিল। তবে বড়দিনের দিন ম্যাচ হওয়ায় বিধাননগর পুলিস কমিশনারেট ২২ হাজার টিকিট বিক্রির অনুমতি দিয়েছে। যদিও এটিকে’র প্রতিটি ম্যাচেই এবার গড়ে ২৫ হাজার লোক হয়েছে।
মাঠে নামার আগেই বেঙ্গালুরু কোচ কুদ্রত কোনও রাখঢাক না করে বলে দিলেন, ‘‘এটিকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। দু’বারের চ্যাম্পিয়ন। তবুও ক্রিসমাস ডে-কে স্পেশ্যাল ডে হিসাবে পালন করতে চাই আমরা।’’ তার কিছুক্ষণ পরেই হাবাসের মুখ থেকেও বেরিয়ে এল একই রকম সম্ভ্রম ও আবেগ, ‘‘আমরা জানি গতবারের চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে খেলতে নামছি। প্রতিযোগিতার সেরা দল বেঙ্গালুরু। এ-ও জানি এই ম্যাচের গুরুত্ব কতটা। ঘরের মাঠে তিন পয়েন্টের লক্ষ্য নিয়েই নামব আমরা।’’
কোচেদের মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ দু’দলের অনুশীলনেও প্রভাব ফেলেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যখন পার্ক স্ট্রিটের রাস্তায় আলোর রোশনাই, মানুষের ঢলে জমজমাট উৎসব শুরু হয়েছে, তখন যুবভারতী সংলগ্ন মাঠে সান্তা ক্লজের টুপি পরে ছবি তুলছিলেন বেঙ্গালুরুর উদান্ত সিংহ, আশিক কুর্নিয়ানরা। সতীর্থদের দেখে দৌড়ে এলেন অধিনায়ক সুনীলও। একটা টুপি চেয়ে নিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে পড়লেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক। তাঁকে দেখার জন্য দাঁড়িয়ে থাকা জনা পঞ্চাশ দর্শককে ‘মেরি ক্রিসমাস’ বলে টিম বাসে উঠলেন বাংলার জামাই।
সুনীলদের কোচ স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, ‘‘রয়-উইলিয়ামস জুটিকে আটকানোর জন্য আলাদা পরিকল্পনা আছে। ওদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া লিগে দীর্ঘদিন খেলা মান্ডি সোসার কথাও মাথায় থাকছে। তিন জনকেই নজরে রাখব আমরা।’’ এখানেই অবশ্য থেমে থাকেননি গতবারের চ্যাম্পিয়ন কোচ। ঘুরিয়ে নিজেদের শক্তির কথা শুনিয়ে রেখেছেন কুদ্রত। বলে দিয়েছেন, ‘‘আমাদের রক্ষণ কিন্তু ন’ম্যাচে মাত্র পাঁচ গোল খেয়েছে। সব দলের চেয়ে যা কম। তবে এ সবই সংখ্যার কচকচানি। কিন্তু প্রত্যেকটা ম্যাচের চরিত্র আলাদা হয়।’’ বেঙ্গালুরুর রক্ষণ যদি এখনও পর্যন্ত প্রতিযোগিতার সেরা হয়, তা হলে তাদের সমস্যা গোল করার লোক নিয়ে। ন’ম্যাচে ১১ গোল করেছে কুদ্রতের দল। তার মধ্যে সুনীলের গোলই পাঁচটি। এ দিন উদান্তদের স্পেনীয় কোচ ইঙ্গিত দেন, জানুয়ারিতে ফিফার জানলা খুললে নতুন বিদেশি স্ট্রাইকার নেবেন।
লিগ টেবলে দুই বনাম তিনের ম্যাচ। পরিস্থিতি যা, তাতে হাবাস বা কুদ্রত, যাঁর দলই জিতবে তাদেরই ফের শীর্ষে ওঠার সুযোগ চলে আসতে পারে। তাই বড়দিনের যুবভারতী জয় করার জন্যে মরিয়া দুই দলই।