লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল(ক্যাব) পাস হওয়ার পর থেকেই উত্তাল গোটা দেশ। যদিও বিলে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর তা এখন আইনে পরিণত হয়েছে। তবে এই ‘কালা কানুন’ মানতে নারাজ অধিকাংশ দেশবাসীই। তাই গত ১০ দিনে কখনও লখনউ, কখনও দিল্লী আবার কখনও আসামের নানা প্রান্তে আগুন জ্বলেছে। বাংলাতেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে স্বতস্ফূর্ত ভাবে মানুষ রাস্তায় নেমেছে। সিএএ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কিংবা সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আন্দোলনে পা মিলিয়েছেন দেশের একাধিক বুদ্ধিজীবিও। কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠিও লিখেছেন তাঁরা। কিন্তু দু’একজন পরিচালক বা অভিনেতা-অভিনেত্রী ছাড়া বলিউডের অধিকাংশ তাবড় তারকারা এই বিষয় নিয়ে মুখ খোলা তো দূরের কথা, সিএএ কিংবা এনআরসি প্রসঙ্গকেই এড়িয়ে গিয়েছেন। কিন্তু কেন? সেই উত্তর দিয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ‘কিছু কিছু অভিনেতারা তাঁদের মত প্রকাশ করেছেন কিন্তু কিছু কিছু অভিনেতারা যাদের কথার গুরুত্ব আছে, যাদের সমাজে অবদান আছে। তাদেরই কথা বলার প্রয়োজন ছিল কিন্তু অদ্ভূত ভাবে তারাই এখন চুপ।’
লোকসাত্তার মতো এক অনুষ্ঠানে গিয়ে নাসিরুদ্দিন শাহ জানিয়েছেন, ‘আমি মনে করি আপনি যদি কোনও জিনিসে বিশ্বাস করেন, তাহলে সেটা নিয়ে আগে সিনেমা বানান। তাতে আপনার ভাবনাকে মানুষ দেখতে পাবে। কার মনে কী চলছে সেটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। কোনও কোনও সময় একজন অভিনেতা যিনি বস্তির ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেন, সে কিন্তু সেই জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে থাকেন। সেখানকার পরিবেশ কিংবা সংস্কৃতির সঙ্গে ওঠাবসা করতে হয় তাদের। তখন কিন্তু নিজের ঝা চকচকে বাতানূকল গাড়িতে বসে ঘুরে বেড়ালে হবে না। মানুষ কীভাবে বাঁচছে, রোজ কীভাবে জীবন-যাপন করছে যদি না আপনি খুবই কাছ থেকে দেখেন তাহলে সমাজের ব্যাথা কিংবা বেদনা বুঝতে পারবেন না আপনি। নিজেকে শিখতে গেলে সমাজের সঙ্গে মিশতে হবে। পৃথিবীতে কেউ সম্পূর্ন অভিনেতা বা পরিপূর্ণ অভিনেতা হতে পারেন না। সারাজীবন কিন্তু আপনাকে কাজ করে যেতে হবে। যারা নিজেদের কাজকে প্যাশন মনে করে তারা কিন্তু কোনওদিন ব্যর্থ হয় না বা হাফিয়ে যায় না।’