নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘ রাজধর্ম’ পালনের পরামর্শের দিনই ‘একতা’র বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রীতির শক্তির স্মরণ করিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আমরা সবাই এক। একসঙ্গে নমস্কার করব, একসঙ্গে সেলামও করব। একসঙ্গেই লড়ব, একসঙ্গেই জিতব।’ সিএএ বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে গোটা দেশেই যখন আগুন জ্বলছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন মনে করিয়ে দিলেন, ‘আমরা বাঙালি। সব ধর্মকে আমরা সম্মান করি।’
সিএএ- এনআরসি বিরোধিতায় ধারাবাহিক আন্দোলনের পঞ্চম দিনে শুক্রবার পার্ক সার্কাস ময়দানের সভামঞ্চ থেকে আজ শায়েরির সাহায্যে কেন্দ্রীয় শাসকদলকে নিশানা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। নেত্রীর নির্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা শায়েরি শোনান, ‘তুম তো কবর সে ডরতে হো, মগর কফন মেরা ইন্তেজার করতা হ্যায়।’ সিএএ- এনআরসি ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘সবাইকে ভাগাতে ভাগাতে, একদিন নিজেরাই ভাগবে বিজেপি।’ গেরুয়া নেতাদের উদ্দেশ্যে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘আমায় বাংলা থেকে হটাবে বলে। তোমাদেরই দেশ থেকে হটানো হবে।’ প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রসঙ্গ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘অটলজি বলেছিলেন রাজধর্ম পালন করো। যে রাজধর্ম পালন করতে ব্যর্থ, সে আজ দেশে বসে আছে।’ প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে গুজরাট হিংসার পর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘রাজধর্ম’ পালনের পরামর্শ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী।
সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস না করে, ছবি এঁকে, গান গেয়ে প্রতিবাদের বার্তা আগেই দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। বৃহস্পতিবারের সভায় বোর্ডে বাংলায় ‘নাগরিক সবাই’ লিখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তেমনই শুক্রবারের সমাবেশমঞ্চে রাখা ছিল ছবি। যাতে তুলে ধরা হয় নাগরিক মুখই। সিএএ- এনআরসি বিরোধী আন্দোলনকে ‘নাগরিক’ নাম দিয়েছেন মমতা। অন্য সভার মতোই, ‘নাগরিক’ স্লোগান তোলেন তৃণমূল নেত্রী। উপস্থিত সমর্থকদের পাশাপাশি সভামঞ্চে উপস্থিত বিশিষ্টরাও তাতে সামিল হন।