সংসদে নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পর গোটা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে এই ‘একুশে আইন’-এর বিরুদ্ধে। ধর্মের ভিত্তিতে এই নাগরিকত্ব সংবিধান বিরোধী বলে সরব হয়েছে দেশের বেশীরভাগ বিরোধী রাজনৈতিক দল। নয়া এই আইন অনুযায়ী পাকিস্তান, আফগানিস্থান ও বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেবে মোদী সরকার। তবে ধর্মের ভিত্তিতে আনা এই নাগরিকত্ব আইন চাই না বলে জানিয়ে দিল পাকিস্তানী হিন্দুরা।
সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দুদের তরফে জানানো হয়েছে, ভারত সরকার যে আইন এনেছে তা মুসলিমদের জন্য বৈষম্যমূলক। ফলে কোনওভাবেই ধর্মের ভিত্তিতে মানবতা বিরোধী। ভারতে সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা তো বটেই এই আইন সনাতন ধর্মেরই বিরুদ্ধে। মিডিয়া সূত্রে পাওয়া দুবাইয়ে বসবাসকারী এক পাকিস্তানী হিন্দু দিলীপ কুমারের বক্তব্য, ‘ভারত সরকার যে আইন তৈরি করেছে সেই আইন মনুষ্যত্বের আধ্যাত্মিক চেতনার বিরুদ্ধে। পাশাপাশি সনাতন হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধেও এই আইন।’
একইসঙ্গে পাকিস্তানের হিন্দু কাউন্সিলের নেতা রাজা আসার মাংলানি সাংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘এটা পাকিস্তানের সমস্ত হিন্দুদের তরফে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য একটি বার্তা। আমরা কেউই মোদী সরকারের এই আইনকে সমর্থন করছি না। এবং যারা সত্যিকারের হিন্দু তারাও কখনও এই আইনকে সমর্থন করবে না।’ একইসঙ্গে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি জানান, ‘মোদী সরকার সংখ্যালঘুদের অধিকারকে হিন্দুত্ববাদী আধিপত্যে তাদের মতাদর্শ অনুসারে প্রতিরোধ ও ক্ষুন্ন করে চলেছে।’
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দেশের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সাক্ষরের সঙ্গে সঙ্গে আইনের মর্যাদা পেয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। এই আইনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে শুরু থেকে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়। এরপর ধীরে ধীরে এর আঁচ এসে পড়ে বাংলাতেও। গত ৩ দিন ধরে এই আইনের প্রতিবাদে রাজপথে মিছিলে নেমেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতের ১০ টি রাজ্য ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে তাদের রাজ্যে এই আইন লাগু করতে দেওয়া হবে না। এরইমাঝে যাদের জন্য এই আইন সেই পাকিস্তানী হিন্দুরাও সরব হল বিভাজনের ভিত্তিতে আনা এই আইনের প্রতিবাদে।