নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ কম হওয়ার কোনও লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছেই না। উপর্যুপরি তা বেড়েই চলেছে। যার জেরে এবার বিজেপি শাসিত দুই রাজ্যে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। মূলত এই আইনের বিরুদ্ধে হতে চলা সবরকম প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর আটকে দেওয়ার জন্যই রাষ্ট্রের তরফে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। সবার প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। পাশাপাশি আরেক বিজেপি শাসিত রাজ্য কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতেও এই ধারা লাগু করা হয়েছে।
নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে দেশজুড়ে প্রবল প্রতিবাদের মধ্যেই উত্তরপ্রদেশ জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। রাজ্যে সমস্ত ধরনের প্রতিবাদ বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বুধবার মধ্যরাতে এক বিবৃতিতে এই কথা জানিয়েছেন পুলিশের ডিজিপি ওপি সিং। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘১৪৪ ধারা জারি হয়েছে এবং আগামী ১৯ ডিসেম্বর কোনও ধরনের জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হয়নি। দয়া করে এতে অংশ নেবেন না। অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ আপনারা আপনাদের সন্তানদের বোঝান।’ বস্তুত যাতে কোনও রকমের বিক্ষোভ প্রদর্শন না করা যায় সেই ভয়েই এই ধারা লাগু করা হয়েছে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার ভোর ছ’টা থেকে ২১ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত বেঙ্গালুরুতে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার ভাস্কর রাও। আগামীকাল কর্ণাটক জুড়ে বামপন্থী ও কিছু মুসলিম সংগঠন মিলে বনধের ডাক দিয়েছে। সেই বনধ ঠেকাতেই এই ধারা লাগু করা হয়েছে। কর্ণাটক পুলিশ ডিজিপি বলেছেন, ‘আজ সকাল ৬টা থেকে বেঙ্গালুরু-সহ আশেপাশের জেলাগুলিতে আগামী তিনদিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হচ্ছে।’ যার ফলে ৫ জনের বেশি ব্যক্তির সমাবেশ, মিটিং-মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হল। কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বাসবরাজ বোমানি বলেছেন, ‘আমরা কোনও ধরনের হিংসা চাই না। যে কারণে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ১৪৪ ধারা জারি করা হল।’
নাগরিকত্ব বিল আইনে রূপান্তরিত হওয়ার পর থেকে এর বিরোধিতায় দেশের নানা জায়গায় প্রতিবাদ শুরু হয়েছে৷ অসম, দিল্লী ও বাংলায় বিক্ষোভ-আন্দোলন হয়েছে৷ বাংলা ও দিল্লীতে আন্দোলনের নামে সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগ উঠেছে বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধে৷ তবে প্রতিবাদ হলেও নিজেদের অবস্থানে অনড় কেন্দ্রীয় সরকার৷