দুর্গাপুরের মতো শহর থেকে উঠে এসে তুর্কিতে গিয়ে চেস বক্সিংয়ে রুপো ও ব্রোঞ্জ জয় করল বাংলার ২ কন্যা। শুনতে ভাল লাগলেও, যাত্রার পথটা খুব একটা মসৃণ ছিল না। হাজারো প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও সব কিছু জয় করে দুর্গাপুরের দুই প্রান্তের দুই কন্যা শ্রাবণী মালাকার আর শিল্পা বর্ধন তুর্কিতে অনুষ্ঠিত চেস বক্সিং প্রতিযোগিতায় রুপো আর ব্রোঞ্জ পদক পেয়ে শুধু বাংলাকে নয়, গোটা দেশবাসীর মুখ উজ্জ্বল করল।
শিল্পা পঞ্চাশ কেজি বিভাগে রুপোর পদক আর শ্রাবণী একই বিভাগে ব্রোঞ্জ পদক পেয়ে ভারতবাসীর মুখ উজ্জ্বল করল। চেস বক্সিংয়ে রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় ভাল ফল করেও অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছিল শ্রাবণী আর শিল্পা। শ্রাবণীর বাড়ি দুর্গাপুর স্টেশনের কাছেই রায়ডাঙ্গাতে। আর শিল্পা থাকে ধোবিঘাটে। বাবা সামান্য লটারি টিকিট বিক্রেতা আর মা অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে কোনওক্রমে সংসার চালান। তাই মেয়ে তুর্কিতে গিয়ে আন্তর্জাতিকস্তরের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে, এটা স্বপ্ন ছিল শ্রাবণীর পরিবারের কাছে।
অন্যদিকে, আর্থিক অনটনের একই ছবি ছিল শিল্পার জীবনে। বাবা বাস কর্মচারী। তাই তুর্কি থেকে ডাক পাওয়ার পরও একটা সময় সেখানে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। অবশেষে দুর্গাপুরের দুই কন্যার স্বপ্নকে সার্থক করতে এগিয়ে আসে প্রশাসন। রাজ্য সরকারের তৎপরতায় তাঁদের দুজনকে তুর্কিতে পাঠানোর কাজ শুরু হয়। এমনকি কিছু শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষজনও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। উদ্যোগী ভূমিকা নেন চার নম্বর বোরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
এত সহযোগিতার জোরেই দুর্গাপুরের দুই কন্যা পাড়ি দেয় তুর্কিতে। চেস বক্সিংয়ে আন্তর্জাতিক স্তরের এই প্রতিযোগীতায় ষোলোটি দেশের ১৩২ জন প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিলেন। জাপান, জার্মানি-সহ আরও বেশ কিছু দেশের প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। বিশ্ব সম্মানের এই প্রতিযোগিতায় তুর্কিতে শহর দুর্গাপুরের দুই কন্যা ছিনিয়ে নিয়ে এল সেরার শিরোপা। যার জেরে আপাতত খুশিতে ভাসছে তাঁদের শহর দুর্গাপুর। খুশির জোয়ার বাংলাতেও।