সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরোধিতায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনদিন ব্যাপী প্রতিবাদ-কর্মসূচির প্রথমদিনে রেড রোডের আম্বেদকর মূর্তি থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত মিছিল করেন তৃণমূল নেত্রী। আম্বেদকরের মূর্তির সামনে ‘এনআরসি-সিএএ হতে দেব না’ শপথ নিয়ে মিছিল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই মিছিলে পা মেলান হাজার হাজার মানুষ।
মিছিল শেষে জোড়াসাঁকোতে সভা থেকে কেন্দ্রীয় শাসকদলকে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা বলেন, ‘আজ হঠাৎ কী এমন হল! বিজেপি তো নিজেকে আকাশের চেয়েও বড় ভাবছে। হিন্দুস্তান আমাদের। আরে সব কা সাথ নহি রহেগা তো সব কা বিকাশ ক্যায়সে হোগা?’ এনআরসি-সিএএ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত যে তিনি আন্দোলন চালিয়ে যাবেন, তাও স্পষ্ট জানিয়ে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার করতে হবে। যতক্ষণ না প্রত্যাহার হবে, আমরা রাস্তাতেই থাকব।’
গেরুয়া শিবিরকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন, ‘মনে রাখবেন বাংলায় আমি আছি। আমার মৃতদেহের উপর দিয়ে এনআরসি করতে হবে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন করতে হবে।’ বাংলায় যে ‘ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ নেই’ তা মনে করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্ম যাঁর যাঁর আপনার, সংবিধান সবার।’ এনআরসি-সিএএ আদতে বিজেপি-র বাংলা দখলের প্ল্যান। তবে আমি তা ভেস্তে দেব। সবাই রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পাঠাব।’
বাংলার মতোই অন্য রাজ্যগুলিও যে সিএএ মানছে না, তাও মনে করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগে আমি একা ছিলাম। এখন দেখুন, দিল্লী, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, পঞ্জাব, ছত্তিশগড়, কেরালার মুখ্যমন্ত্রীরাও সিএএ মানবে না বলছেন।’ রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, নাগরিকত্ব আইন-জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বিরোধী আন্দোলনে তিনিই যে প্রধান বিরোধী-মুখ, তা ফের একবার বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়।
সংবাদপত্রে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞাপনেও যদি নাগরিকত্ব আইন মানার কথা দেখা যায়, তবুও তা মানতে রাজ্যের মানুষকে নিষেধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে একই সঙ্গে কোনওধরনের হিংসা সমর্থন তিনি করবেন না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘কেউ কেউ বিজেপি-র টাকা খেয়ে আগুল জ্বালাচ্ছে। আপনারা ট্রেনে, পোস্ট অফিসে, রাস্তায় আগুন দেবেন না।’