চলতি বছর লোকসভা ভোটে শরিক-সহ ৩৫৩টি আসন জয় করেছিল এনডিএ জোট। যার মধ্যে ৩০৩টি আসন একাই পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু ভোট শেষ হওয়ার ছয় মাস পর উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গবেষণা চালিয়ে দাবি করেছিল, এর মধ্যে নাকি ৩৪৭টি আসনেই ভোট গণনার ক্ষেত্রে গড়মিল লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ওই দুই সংস্থা। যার প্রেক্ষিতে তদন্তের দাবি জানায় তারা। বুথ প্রতি ভোটারদের উপস্থিতির তুলনায় গণনার সময় অনেক বেশি ভোট গোনা হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছে ওই সংস্থাগুলি। সুনির্দিষ্ট ৩৪৭টি লোকসভা কেন্দ্রেই এই গড়মিল হয়েছে বলে দাবি। এরপরই সব খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকে নোটিশ ধরিয়েছে শীর্ষ আদালত।
খোদ প্রধান বিচারপতি শরদ বোবদের সাংবিধানিক বেঞ্চই এই নোটিস দিয়েছে। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে নাগাদ মামলাটির শুনানি শীর্ষ আদালতে হতে পারে বলে জানা গেছে। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর) ও কমন কজ নামক এই দুই সংগঠনের দাবি, রীতিমতো উদ্বেগজনক। যা সত্যি প্রমাণিত হলে অদূর ভবিষ্যতে সাধারণ নাগরিক ভোটের ওপর থেকেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলতে পারেন। ৫৪২-এর মধ্যে ৩৪৭টি আসনেই উপস্থিত ভোটার সংখ্যা এবং নির্বাচন শেষে গণিত ভোটের এই ফারাক লক্ষ্য করতে পেরেছে দুই সংস্থার গবেষণা। তারা আরও জানাচ্ছে, সন্দেহজনক কেন্দ্রগুলোতে এই ফারাক ১টি ভোট থেকে নিয়ে ১,০১,৩২৩টি ভোট অবধি রয়েছে। একটি কেন্দ্রে শতকরা নিরিখে যা ১০.৪৯ শতাংশ। অর্থাৎ কোনও প্রার্থীর জেতা-হারা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট।
সুপ্রিম কোর্টে তাই এই পিটিশনের মাধ্যমে আবেদন করা হয়েছে, হিসেবে এই গড়মিল কেন তার যথোপযুক্ত ব্যাখ্যা যাতে নির্বাচন কমিশন দেয়। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখার স্বার্থে, এবং এর পদ্ধতির ওপর মানুষের বিশ্বাস অক্ষুন্ন রাখতে মামলাটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার আবেদন জানানো হয়। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, নির্বাচনের সমস্যার সমাধান করার পথ রয়েছে। কিন্তু দেশের জাতীয় নির্বাচনে এতগুলি আসনে যে গড়মিল হয়েছে বলে দাবি, সেটা নিয়ে সমাধান পাওয়ার কোনও পথ বা আইন নেই। সেই দিকটি যেন শীর্ষ আদালত নিজে বিচার করে দেখে।