শিশুশ্রম যে এক মারাত্মক অপরাধ, তা বোধহয় ভুলে গেছিলেন পুরুলিয়ার বিজেপি নেতা সুব্রত দাস। তাই তাঁর বাড়ির কাজকর্মের জন্যে নিযুক্ত করেছিলেন এক বছর এগারোর নাবালিকাকে। আর শুধু তাই নয়, এই কাজে শরীর সায় না দিলেই মিলত শাস্তি। কান ধরে ওঠবোস থেকে চড়-থাপ্পড় এমনকি জুটত মারও। কিন্তু হঠাৎই শরীর একেবারেই সায় না দেওয়ায়, কোনও কাজই করতে পারছিল না সে। সেই কারণে খুনের হুমকি দেওয়া হয় নাবালিকাকে। এমনই অভিযোগে গ্রেফতার করা হল বাড়ির মালিক তথা বিজেপির মণ্ডল সভাপতি সুব্রত দাসকে।
বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে পুরুলিয়ার হুড়ায় এমন শিশুশ্রমের অভিযোগ ওঠায় হতবাক জেলার রাজনৈতিক মহল। হুড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত চলছে। সোমবার এই ঘটনায় ধৃত বিজেপির ওই হুড়া মণ্ডল সভাপতিকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হবে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ হুড়ার লক্ষ্মণপুর বয়েজ আদিবাসী হোস্টেলে কাজ করছিলেন মীরা বাউরি। সেইসময় তিনি দেখতে পান ওই নাবালিকা খালি গায়ে ভয়ার্ত চোখ-মুখে হোস্টেলের দিকে আসছে। ওই ভবন থেকে তা চোখে পড়তেই উৎসাহের বশে ওই বালিকার কাছে যান মীরা দেবী। নাবালিকার চোখ–মুখ দেখে ঘাবড়ে যান তিনি। তাকে শান্ত করে বাড়িতে নিয়ে যান তিনি। তাঁদের কাছেই গোটা ঘটনা খুলে বলে ওই নাবালিকা। এরপরই হুড়া থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কাউন্সেলিং করে।
নিগৃহীতা বালিকা জানায়, তাকে কাজ করানোর জন্য হুড়ার নদিয়াতে নিয়ে আসেন ধৃত সু্ব্রত দাস। তাকে দিয়ে বাসন মাজা, কাপড় কাচানো হত। ওই সব কাজ না করলেই কান ধরে ওঠবোস ছিল নিত্য দিনের ঘটনা। এছাড়া চড়-থাপ্পড়, মারধরও করা হত বলে অভিযোগ। কাজ না করলে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হত বলে অভিযোগ নাবালিকার। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বাড়ি মালিক বিজেপির মণ্ডল সভাপতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।