গতকাল ধুতি পরে নোবেল নিয়ে বিশ্বমঞ্চে বাঙালির বিজয় কেতন উড়িয়েছিলেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর আজ বুধবার সংসদে দাঁড়িয়ে খাঁটি বক্তৃতা দিয়ে সেই পতাকাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিলেন নির্দল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাঙালি বিরোধী অভিযোগে বিদ্ধ বিজেপির মুখের ওপর জবাব দিতে বাংলা ভাষাকে হাতিয়ার করলেন ঋতব্রত। এদিন সংসদে আগাগোড়া তিনি ছিলেন আক্রমণাত্মক। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় বক্তব্য করতে উঠে বিজেপিকে কার্যত তুলোধোনা করেন। এদিন নির্দল সাংসদ ঋতব্রত বলেন, ‘সরকার বলছেন পাসপোর্ট ও বৈধ প্রমাণ পত্রের সময়সীমা বাড়ানোর কথা। কিন্তু যে মানুষ প্রাণ ভয়ে পালিয়ে এলেন, এটা তো সম্ভব নয় প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা মানুষ সবকিছু সঙ্গে করে নিয়ে পালিয়ে আসবেন। ইন্দিরা গান্ধী মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করেন। পালিয়ে আসা মানুষদের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছিল সেই সময়। কিন্তু শুধু বাঙালি বলে ত্রাণ শিবিরে যথেষ্ট নির্যাতনের শিকার হতে হয় বাঙালিদের।’
বিজেপির ঔদ্ধত্য ভাঙতে এদিন রবীন্দ্রনাথের কবিতা উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘ ‘অহরহ তব আহ্বান প্রচারিত, শুনি তব উদার বাণী/ হিন্দু বৌদ্ধ শিখ জৈন পারসিক মুসলমান খৃস্টানী/ পূরব পশ্চিম আসে তব সিংহাসন-পাশে/ প্রেমহার হয় গাঁথা।’ তাঁর কথায়, ‘রবীন্দ্রনাথের ভাবনাকে অসম্মান করা হচ্ছে। ভারতের মূল ভিতকে আক্রমণ করা হচ্ছে। এই কাটাতার কাল হয়ে এসেছে দেশে। যার কুফল দেশ এখনও ভোগ করছে।’
ক্যাবের বিরোধিতায় ঋতব্রতর সাফ প্রশ্ন, ‘ভাষা রক্ষার লড়াইয়ে সেদিন ওপার বাংলার মানুষ রক্ত দিয়েছিল। সেখান থেকে সেই সময় যারা পালিয়ে আসেন তাঁরা মারা গেছেন। যারা ত্রাণ শিবিরে ছিলেন। কিন্তু তাঁদের তৃতীয় পুরুষ আজও এ দেশে। তাঁরা কোথা থেকে পাবে প্রমাণ পত্র?’ তাই তিনি আর্জি জানান যেন এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এনে আর বাংলাকে বিভাজনে চেষ্টা না করা হয়। তাঁর শেষ কথা, ‘দেশ ভাগ হয়েছে। আমাদের আত্মা যেন দ্বিখণ্ডিত না হয়।’