ছোট-বড় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি চাকুরে, রেশন দোকানের মালিক বা শিক্ষক-শিক্ষিকা — রাজ্য জুড়ে এইরকম অসংখ্য মানুষের কাছেই সম্প্রতি আসছে একটা ফোন কল। ফোন ধরলেই ফোনের ওইপার থেকে কোনও পুরুষ বা মহিলা বলছেন – ‘নমস্কার! আপনি তো শিক্ষকতা করেন। আমরা প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা থেকে কথা বলছি। কিছু বিষয়ে আপনার মতামত চাই।’
শুধু তাই নয়, কখনও মুখোমুখি এসেও এ কথা বলছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার কর্মীরা। চাইছেন মতামত। কী বলছেন তাঁরা? গোপনীয়তার শর্তে তাঁদের কাছেই প্রশান্তের সংস্থার তরফে জানতে চাওয়া হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট এলাকার বিধায়ক (তৃণমূল) কেমন? এলাকায় কি সময় দেন তিনি? কাজ করেন? আর একেবারে শেষের দিকে জেনে নেওয়া হয়েছে, কাজের নিরিখে নিজের বিধায়ককে ১০-এ কত নম্বর দিতে চান তিনি।
রাজ্যবাসীকে চমকে দিয়ে এভাবেই ‘২১-এর বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাইয়ের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন পিকে। জেলায় জেলায় একই কেন্দ্রে একাধিক ‘সম্ভাব্য প্রার্থী’ সম্পর্কেও সংস্থার তরফে এই মত সংগ্রহের কাজ শুরু করা হয়েছে। ফোনের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি জেলায় সরাসরি এই তথ্য সংগ্রহের জন্য ছোট ছোট ‘টিম’ও পাঠিয়েছে তারা। বিভিন্ন জেলায় নিযুক্ত সংস্থার কোঅর্ডিনেটর এর মাধ্যমে এই তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
তৃণমূলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘বিধায়কদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। তবে অন্যান্য স্তরে স্থানীয় প্রশাসনের কাজকর্ম নিয়েও একেবারে দল-নিরপেক্ষ এলাকার মানুষের মত নিচ্ছে তারা।’ কোথাও বিধায়ক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেলে বিকল্প নাম জানতে চেয়েছেন তারা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সংস্থার পক্ষ থেকেই অন্য নাম জানিয়ে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও দেখে নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে রাজ্যের ২৯৪ বিধানসভা আসনের মধ্যে ১২৯ টি আসনে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। শেষ বিধানসভা ভোটের ফলের তুলনায় ফল অনেকটাই খারাপ। সম্ভবত সেই কারণেই প্রায় দেড় বছর পরে নির্ধারিত বিধানসভা ভোটের জন্য এখন থেকেই এই সমীক্ষা শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূলের এই পরামর্শদাতা।