প্রতিবেদন : আরও একবার ভেঙে পড়ল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাধের ‘গুজরাট মডেল’-এর গুমর। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার আগে এই ‘মডেল’কেই প্রচারের অস্ত্র করে তুলেছিলেন তিনি। ক্ষমতায় আসার পরও বারবার ‘গুজরাট মডেল’-এর গালভরা বুলি শোনা গিয়েছে মোদীর মুখে। কিন্তু আদৌ কতটা এগিয়ে গুজরাট? বাস্তব চিত্র পুরোপুরিই বিপরীত। সে রাজ্যে তথাকথিত ধনী বা উচ্চ মধ্যবিত্তের সংখ্যাটা উল্লেখযোগ্যভাবে কম! আয়কর বিভাগের তথ্য সে কথাই বলছে। তা অনুযায়ী, করদাতার(Tax Payers )সংখ্যার নিরিখে গুজরাটের চেয়ে ঢের এগিয়ে বাংলা। এমনকী ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যও পিছনে ফেলেছে গুজরাটকে।
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বার্ষিক ২৫ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা আয় ঘোষণাকারীর সংখ্যার নিরিখে গোটা দেশে প্রথম দশেও নেই গুজরাট। মহারাষ্ট্রে ১.৩৭ লক্ষ করদাতার রোজগার ২৫ থেকে ৫০ লক্ষের মধ্যে। দ্বিতীয় স্থানে কর্ণাটক। সেখানে ২৫-৫০ লক্ষ টাকা রোজগেরের সংখ্যা ১.৩০ লক্ষ। তৃতীয় স্থানে তামিলনাড়ু। সে রাজ্যে ২৫-৫০ লক্ষ টাকা রোজগেরের সংখ্যা ৪৩.৯ হাজার। এই তালিকায় প্রথম দশেও নেই গুজরাট। বাংলা রয়েছে ৬ নম্বরে। দশম স্থানে রয়েছে অন্ধ্র। সে রাজ্যে বার্ষিক ২৫-৫০ লক্ষ টাকা রোজগারের করদাতার(Tax Payers)সংখ্যা ২৬.৭ হাজার।

কেবল ধনীই নয়, সার্বিক করদাতার সংখ্যার নিরিখেও অনেক পিছিয়ে ‘মডেল’ রাজ্য গুজরাট। গুজরাটের মোট বাসিন্দার মধ্যে মাত্র ৭ শতাংশের রোজগার ১২ লক্ষের বেশি। ঝাড়খণ্ডের মতো পিছিয়ে থাকা রাজ্যেও ২০ শতাংশ বাসিন্দার রোজগার ১২ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার মধ্যে। সদ্যই এই পরিসংখ্যান সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ তথা প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকার।
স্বাভাবিকভাবেই সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদী সরকার তথা বিজেপি। তথাকথিত মডেল রাজ্য গুজরাটে ধনীর সংখ্যা এত কম কেন? তাহলে কি সার্বিকভাবেই আর্থিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে গুজরাটবাসীর? নাকি এর নেপথ্যে রয়েছে কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা? উঠছে প্রশ্ন। আসলে গুজরাটের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ ব্যবসায়ী। তাদের অধিকাংশ লেনদেন নগদে। এদের অনেকেই হয়তো আয়কর রিটার্নই ফাইল করেননি। যে কারণে করদাতার সংখ্যার সঙ্গে বাস্তব ছবির ফারাক থাকতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।