প্রতিবেদন : খোদ প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে আরও একবার প্রকাশ্যে এল ‘অনার কিলিং’-এর(Honour Killing) ভয়াল প্রতিচ্ছবি। গভীর রাতে প্রেমিকার কাছ থেকে মেসেজ পেলেন এক যুবক, ‘‘আমাকে বাঁচাও। বাড়ির লোকেরা মেরে ফেলবে।’’ পরদিনই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় তরুণীর মৃতদেহ। ঘটনায় ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে তুমুল শোরগোল। একে ‘সম্মানরক্ষার্থে খুন’ বলেই মনে করছে প্রশাসন।
Read More: নিম্নচাপের জেরে দক্ষিণবঙ্গে ফের বৃষ্টি, কেমন থাকবে কলকাতার আবহাওয়া! জানাল হাওয়া অফিস
ঘটনাটি গুজরাতের বনসকণ্ঠের দাঁতিয়ার। মৃতার নাম চন্দ্রিকা চৌধরি। বয়স ১৮। তাঁর বাবা সেধাভাই পটেল এবং কাকা শিবভাই পটেলের বিরুদ্ধে তরুণীকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় তরুণীর কাকা-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু মূল অভিযুক্ত কিশোরীর বাবা পলাতক। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, চন্দ্রিকার সঙ্গে হরিশ চৌধরি নামে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাঁরা বিয়ে করার পরিকল্পনাও করেছিলেন। কিন্তু চন্দ্রিকার পরিবারের প্রবল আপত্তি ছিল তাতে। কিন্তু চন্দ্রিকাও ছিলেন অনড়। সাফ জানিয়েছিলেন, বিয়ে করলে হরিশকেই করবেন তিনি।

পরিবারের অমতে এহেন সিদ্ধান্তের জেরে যে তিনি চরম বিপদের মুখে পড়তে পারেন, তা অনুমান করতে পারছিলেন চন্দ্রিকা। হরিশকে সে কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। তার পরই তাঁরা দু’জনে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু পালিয়েও শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি করে চন্দ্রিকার পরিবার। তারপর পুলিশ চন্দ্রিকাকে খুঁজে বার করে বাড়িতে ফিরিয়ে দেয়। হরিশ অত্যন্ত দুশ্চিন্তায় ছিলেন চন্দ্রিকাকে নিয়ে। তাঁর যাতে কোনও রকম ক্ষতি না হয়, তাই আদালতে একটি মামলা করেন। কিন্তু শুনানির আগেই চন্দ্রিকার দেহ উদ্ধার হয়।(Honour Killing) আত্মীয়স্বজন, পড়শিদের কাউকে মৃত্যুর খবর না জানিয়েই তড়িঘড়ি চন্দ্রিকার শেষকৃত্য করে তাঁর পরিবার। স্বাভাবিক মৃত্যুর একটি শংসাপত্র বানিয়ে সকলকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টাও করেছিল।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1955910464095052053
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, মৃত্যুর আগের রাতে চন্দ্রিকা মেসেজ করেছিলেন হরিশকে। চন্দ্রিকা লিখেছিলেন, ‘‘আমাকে এসে নিয়ে যাও। বাড়ির লোকেরা অন্য কারও সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক করছে। যদি রাজি না হই, আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাঁচাও আমাকে।’’ গত ২৪ জুন রাতে চন্দ্রিকার করা সেই মেসেজ পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন হরিশ। তিনি অভিযোগ করেছেন, স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, খুন করা হয়েছে তাঁর প্রেমিকাকে। সহকারী পুলিশ সুপার সুমন নালা জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে যে, এটি পরিকল্পিত খুন। তরুণীর বাবা এবং কাকা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। কারও স্বাভাবিক মৃত্যু হলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ বা চিকিৎসককে দেখানো হয়। এ ক্ষেত্রে তেমন কিছু করা হয়নি। তরুণীর দ্রুত শেষকৃত্য করা হয়। তরুণীর মৃত্যুর খবর কাউকে জানানো হয়নি, এমনকী তাঁর ভাইকেও। আর এখান থেকেই সংশয় জাগে, তরুণীর পরিবার কিছু একটা গোপন করছে।