কলকাতা : কী কী বিষয় উঠে আসবে তাঁর বক্তব্যে, সেদিকেই তাকিয়ে ছিল তামাম রাজনৈতিক মহল। অপেক্ষায় ইতি টেনে শহীদ স্মরণের মঞ্চে ভাষণ দিতে উঠলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বক্তব্যের শুরু থেকেই বিজেপিকে নিশানা করলেন তিনি। একাধিক ইস্যুতে তুলোধোনা করলেন গেরুয়া শিবিরকে। তাঁর ভাষণে উঠে এল সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপিশাসিত ওড়িশায় ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ছাত্রীরমৃত্যুর কথা। তুললেন মতুয়াদের উপর অত্যাচারের প্রসঙ্গও। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলির আইনশৃঙ্খলার ত্রুটি নিয়ে সুর চড়ালেন তৃণমূল নেত্রী।
মমতার কথায়, ‘‘বিজেপির চক্রান্ত তো চলছে। বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদছে। মানুষের কথা বলে না তারা। নির্বাচনের আগে প্রথম সার্কুলার ভারত সরকার পাঠিয়েছে। এক হাজারের উপর লোককে কাউকে মধ্যপ্রদেশ, কাউকে ওড়িশা তো কাউকে রাজস্থানের জেলে ভরা হয়েছে।’’ নেত্রীর দাবি, বাংলায় একের পর এক উন্নয়নে ভয় পেয়ে বঞ্চনার রাজনীতি করছে বিজেপি। বাংলা জুড়ে কাজ হয়েছে। তাই বাংলাকে নিশানা করছে বিজেপি। ‘‘বাংলা ভাষার উপর সন্ত্রাস চলছে কেন? বাংলা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে। নবজাগরণ হয়েছে বাংলা থেকেই। বাংলার মাটি দুর্বৃত্তদের হবে না। বাংলার মানুষকে যদি বাংলা বলার জন্য বাইরে গ্রেফতার করা হয় এই লড়াই কিন্তু দিল্লিতে হবে। আমি কিন্তু ছাড়ার লোক নেই। মনে আছে, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের কথা? দরকারে আবার ভাষা আন্দোলন শুরু হবে’’, জানান তিনি।
তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘বাংলায় কথা বলতে ভয় পান আপনারা। বাংলা রবন্দ্রনাথ, বঙ্কিমচন্দ্র, নজরুলের জন্ম দিয়েছে। বাংলা থেকেই লেখা হয়েছে,জাতীয় সঙ্গীত। বাংলা ভাষায় নাকি কথা বলা যাবে না! কে মাছ খাবে, কে মাংস খাবে, কে ডিম খাবে ওরা ঠিক করে দেবে! বিজেপির এক জন নেতা বলছেন এখানে নাকি ১৭ লক্ষ রোহিঙ্গা আছে। মোট কত রোহিঙ্গা? আপনি এত জনকে বাংলাতেই বা পেলেন কোথায়?’’
জনতার উদ্দেশ্যে মমতার বার্তা, ‘‘এই সংগ্রাম চলবে, সেদিন শেষ হবে যেদিন দিল্লিতে পরিবর্তন হবে। আর বামেদের কথা ছেড়ে দিন। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ে টাকা খেয়ে বসে আছে।’’ এরপরই
বিজেপিশাসিত রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। ‘‘মতুয়া ভাইদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। কী জবাব দেবে তার বিজেপি? যখন ওড়িশায় ছাত্রীর সম্মান নষ্ট হল, যখন ওড়িশার রাস্তায় ছাত্রীর গায়ে আগুন ধরানো হয়, তার উত্তর কে দেবে? উত্তর দিতে হবে’’, সাফ জানান তৃণমূল সুপ্রিমো।