প্রতিবেদন : আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে এএআইবি। এর মধ্যেই বিতর্কের কেন্দ্রে এক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’। অভিযোগ, মার্কিন সংস্থা বোয়িংকে আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। আর তাদের রিপোর্টে বিমান দুর্ঘটনার দায় পাইলটদের উপর চাপানো হচ্ছে! ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষুব্ধ ভারতীয় পাইলটদের সংগঠন ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পাইলটস।
প্রাথমিক রিপোর্টে এআইআইবির তরফে জানানো হয়, দুর্ঘটনার আগের মুহূর্তে জ্বালানির সুইচ ‘রান’ থেকে ‘কাটঅফ’ অবস্থায় চলে যায়। অর্থাৎ জ্বালানির সুইচে সমস্যা ছিল। কিন্তু আপাতত বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানের জ্বালানি সুইচে কোনও সমস্যা নেই বলেই জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, আহমেদাবাদ দুর্ঘটনার আগের মুহূর্তে বিমানটি যখন উপরে ওঠার জন্য গতি পাচ্ছে, তখনই দু’টি ইঞ্জিনের জ্বালানি ‘কাটঅফ’ মুডে চলে যায়। ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিমানের উচ্চতা কমতে থাকে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই অবশ্য পাইলটরা ফের বিমানের দুটি ইঞ্জিনের জ্বালানি ফের ‘কাটঅফ’ থেকে থেকে ‘রান’ মুডে নিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে অনেকটাই। একটি ইঞ্জিন চালু হলেও আর একটি ইঞ্জিন চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলত ‘থ্রাস্ট’ পাওয়া যায়নি।
এএআইবি’র এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল দাবি করেছে যে, মার্কিন আধিকারিকরা নিশ্চিত ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে ক্যাপ্টেনের ভুলেই। ব্ল্যাকবক্সের রেকর্ডিংয়ে থেকে জানা গিয়েছে, ক্যাপ্টেনই ফুয়েল সুইচ বন্ধ করে দেন। তাতেই আপত্তি ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পাইলটসের। পাইলটদের ওই সংগঠন বলছে, “যেভাবে এএআইবি’র রিপোর্টকে জনসমক্ষে দেখানো হচ্ছে তাতে আমরা অসন্তুষ্ট। এভাবে স্বচ্ছ, বিজ্ঞান নির্ভর এবং তথ্যনিষ্ঠ তদন্ত না করেই পাইলটদের উপর দায় ঠেলাটা শুধু তাড়াহুড়ো নয়, এটা দায়িত্বজ্ঞানহীনতা।”
উল্লেখ্য, অভিশপ্ত বিমানের পাইলট সুমিত সভরওয়ালের ৮২০০ ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল। সহকারী পাইলট ছিলেন ক্লাইভ কুন্দার। ১১০০ ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল তাঁরও। এ হেন অভিজ্ঞ দুই পাইলট ভুলবশত জ্বালানি বন্ধ করে দেবেন, সেটা স্বাভাবিক নয়। ফলত যান্ত্রিক গোলোযোগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।