বেঙ্গালুরু : গত ৪ জুন বেঙ্গালুরু ঘটে যাওয়া পদপিষ্ট-কাণ্ডে ফের বিপাকে পড়ল আরসিবি। এত মানুষের মৃত্যুর দায় পুরোপুরি ফ্র্যাঞ্চাইজির উপর চাপিয়ে দিল কর্ণাটক সরকার। হাইকোর্টে পদপিষ্টের ঘটনার রিপোর্ট জমা দিয়েছে তারা। প্রাথমিকভাবে সিদ্দারামাইয়ার সরকারের দাবি ছিল, ওই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা যাবে না। কিন্তু হাইকোর্ট জানায়, এই তদন্তের রিপোর্ট গোপন রাখার কোনও কারণ বা আইনি বৈধতা নেই। সেই রিপোর্ট জনসমক্ষে এনেছে উচ্চ আদালত।
রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, কর্ণাটক সরকার পুরো ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে। রিপোর্ট সব দায় চাপানো হয়েছে আরসিবির উপর। সরকারের দাবি, পুলিশ বা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই এত বড় অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সোশাল মিডিয়াতেও সেই নিয়ে পোস্ট করা হয়েছিল। যেহেতু সময় কম ছিল, তাই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে পারেনি পুলিশ।
পাশাপাশি কর্ণাটক সরকারের দাবি, পুলিশের সঙ্গে ভিড় সম্পর্কে কোনওরকম আলোচনা না করেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক পোস্ট করে গিয়েছে। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে সমর্থকদের আমন্ত্রণ জানানোর আগে কোনওরকম আলোচনাও করা হয়নি, অনুমতিও নেওয়া হয়নি। সরকারের দাবি, আইপিএল জয়ের পর গভীর রাতে আরসিবি ম্যানেজমেন্ট পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা ওই সেলিব্রেশন সম্পর্কে শুধু জানিয়েছিল। কোনওরকম অনুমতি চায়নি।
রিপোর্টে এও বলা হয়েছে, আরসিবির সোশাল মিডিয়ায় হ্যান্ডেলগুলিতে একের পর এক পোস্ট করে সমর্থকদের আমন্ত্রণ জানানো হয় চিন্নাস্বামীতে। সেই পোস্টগুলিতে বিরাট কোহলির ভিডিও ছিল। তাতে বিরাটকেও দেখা গিয়েছে সমর্থকদের আমন্ত্রণ জানাতে। সব মিলিয়ে আরসিবির পোস্টগুলিতে ৪৪ লক্ষ ভিউ হয়েছিল।সরকারি রিপোর্টের দাবি, পুলিশ চেয়েছিল ৯ জুন গোটা অনুষ্ঠানটি করতে। সদ্য আইপিএল জয়ের পরদিনই ওই অনুষ্ঠান করলে আবেগের বশবর্তী হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় জমাতে পারে, সেই আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল পুলিশ। তাতে আরসিবি’র আপত্তি ছিল। কারণ দ্রুত বিদেশি ক্রিকেটারদের ছেড়ে দিতে হত।
এরপর অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফ্র্যাঞ্চাইজির নাছোড়বান্দা মনোভাবে চিন্নাস্বামীর অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয় পুলিশ। কিন্তু রোড শো বাতিল করা হয়। তবে তা আবার আরসিবির তরফে ঘোষণা করা হয়নি। উলটে চিন্নাস্বামীর মূল অনুষ্ঠানের ঘণ্টাদুয়েক আগেও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ওই বিজয় শোভাযাত্রা হবে বলে ঘোষণা করা হয়। টিকিট সংখ্যা সীমিত, তাও আবার বিনামূল্যে। তার মধ্যে ওই পোস্টের জন্যও অনেক মানুষ জমায়েত করেন বেঙ্গালুরুর রাস্তা এবং স্টেডিয়ামের বাইরে। চূড়ান্ত অব্যবস্থার ফলেই প্রাণ হারান ১১ জন সমর্থক।