নয়াদিল্লি : গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হামলায় মৃত্যু হয় ২৬ নিরস্ত্র মানুষের। এই হামলার প্রত্যাঘাতস্বরূপ ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়ে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারত। এবার দেশের সেনাবাহিনীর শক্তি আরও বাড়ানোর বার্তা দিলেন সেনা সর্বাধিনায়ক জেনারেল অনিল চৌহান। বার্তা দিলেন, “গতকালের অস্ত্র ব্যবহার করে আজকের যুদ্ধ জেতা সম্ভব নয়। ভারতকে যুদ্ধক্ষেত্রে শক্তিধর হয়ে উঠতে গেলে ভবিষ্যৎ প্রযুক্তিতে আরও বেশি করে সাবলীল হয়ে উঠতে হবে।”
দিল্লিতে ‘ইউএভি এবং কাউন্টার-ইউএএস (সি-ইউএএস) সিস্টেম’ শীর্ষক এক প্রদর্শনীতে উপস্থিত হয়েছিলেন সেনা সর্বাধিনায়ক। সেখানেই তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য আমরা বিদেশি উৎসের উপর নির্ভরশীল থাকতে পারি না। যে কোনও অভিযানে এই বিদেশি নির্ভরতা আমাদের দুর্বল করে দেয়। চৌহান বলেন, “ড্রোন প্রযুক্তির বিকাশ ধীর গতিতে হলেও এর ব্যবহার বিপ্লব এনেছে। ড্রোনের প্রভাব উপলব্ধি করার পাশাপাশি সামরিক ক্ষেত্রে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে এই প্রযুক্তি।”
পাশাপাশি অপারেশন সিঁদুরের কথা মনে করিয়ে সেনা সর্বাধিনায়ক জানান, “১০ মে পাকিস্তান ভারতের উপর ড্রোন নিক্ষেপ করেছিল, যদিও আমাদের সেনা তাদের সেই হামলা পুরোপুরি ব্যর্থ করে দেয়। দেশের সামরিক ও বেসামরিক সম্পত্তির কোনও ক্ষতি হয়নি। বরং ওদের কিছু ড্রোন প্রায় অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হয়। অপারেশন সিঁদুর আমাদের স্পষ্ট করে দিয়েছে ভারতের ভৌগোলিক অবস্থান ও চাহিদা অনুযায়ী দেশীয় কাউন্টার-ইউএএস সিস্টেমের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আমাদের আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে। প্রতিরক্ষা চাহিদার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”
উল্লেখ্য, দেশীয় প্রযুক্তি বর্তমান সময়ে কতটা প্রয়োজনীয়, তার ব্যাখ্যাও করেন অনিল চৌহান। “অস্ত্র ও যুদ্ধের রণনীতি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি আধুনিক সাশ্রয়ী ও বহুমুখী হয়ে উঠেছে। একসময় যুদ্ধমানে বোঝাত ভারী রাইফেল। যা এখন হয়ে উঠেছে হাল্কা, দীর্ঘ পাল্লার এবং রাতেও ব্যবহারোপযোগী। ট্যাঙ্ক, বিমান আগের চেয়ে আরও হালকা, দ্রুতগতি সম্পন্ন ও নিরাপদ হয়ে উঠেছে। একইভাবে ড্রোন এবং কাউন্টার-ড্রোন প্রযুক্তিতেও আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। আজকের যুদ্ধ ‘গতকালের প্রযুক্তি’ দিয়ে লড়া যাবে না। ভবিষ্যত সুরক্ষিত করার জন্য আমাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতাকে দেশীয়ভাবে ব্যবহার করতে হবে”, জানান তিনি।