কলকাতা: বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অপরাধ একটাই, তারা বাংলা ভাষায় কথা বলেন! পুশব্যাক করা হচ্ছে মতুয়া-রাজবংশীদেরও। ধর্মতলার মঞ্চ থেকে মমতার হুঁশিয়ারি, “আরও বাংলায় কথা বলব। ক্ষমতা থাকলে আমাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখুন।” পাশাপাশি লুকিয়ে কেন্দ্র নোটিফিকেশন পাঠিয়েছে বলেও জানান মমতা।
ধর্মতলার সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঙ্কার, “আমি ঠিক করেছি, আরও বেশি বাংলায় কথা বলব। ক্ষমতা থাকলে আমাকেও ডিটেনশন শিবিরে রাখুন। অসমে ১২ লক্ষ বাঙালি বাদ দিয়েছেন। রাজবংশীরা হিন্দু না মুসলিম? এই বিজেপি-র দালাল, লজ্জা করে না! নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে ভোটার বাদ দিয়ে দিচ্ছে। বলছে ২০০২ সালের তালিকা দেখবে। কত লোক তো মারা গিয়েছেন! কত নতুন লোক এসেছেন, কত বাচ্চা জন্মেছে। কে কী পরবে, কে কী খাবে, কে কোথায় থাকবে, কে কোন ভাষায় কথা বলবে, তা ওরা ঠিক করবে!”
মমতা বলেন, “ওরা বলেছে বাংলায় কথা বললেই অ্যারেস্ট করুন। আমরা সব ভাষাকে সম্মান করি। যারা ভারতের নাগরিক তাঁদের সকলকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু বাঙালির অপমান মানব না। অত্যাচার সহ্য করা হবে না। জমিদারি নাকি? বাংলা বললেই বাংলাদেশি রোহিঙ্গা বলবেন? কত রাজবংশীকে পুশব্যাক করেছেন? মতুয়াদের কেন অত্যাচার করা হচ্ছে? রাজবংশীরা হিন্দু নন? মতুয়ারা হিন্দু নন?” সম্প্রতি কোচবিহারের এক বাসিন্দাকে এনআরসি নোটিস পাঠিয়েছে অসম সরকার। মমতার প্রশ্ন, “অসম সরকার কোন অধিকারে নোটিস পাঠায়? অসমে ১২ লক্ষ হিন্দু বাঙালি ডিটেনশন ক্যাম্পে কেন?”
এদিন মমতা বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার প্রতিবাদে অভিযোগ তুলে বলেন, “আমি অত্যন্ত লজ্জিত, ব্যথিত, দুঃখিত, মর্মাহত ভারত সরকার এবং বিজেপির এই আচরণে। ভারত সরকার একটি নোটিফিকেশন করেছে। সেটি আমরা চ্যালেঞ্জ করব। লুকিয়ে লুকিয়ে (নোটিফিকেশন) করে যেখানে বিজেপি আছে সেখানে পাঠিয়েছে। সেখানে পরিষ্কার বলা হয়েছে, যাকেই সন্দেহ হবে, বাংলায় কথা বলে, তাঁকে অ্যারেস্ট করবে, ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে। কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেলেও (এমন হচ্ছে)।” এই মর্মে তিনি সাফ জানান ‘বাঙালিদের উপর অত্যাচার মানব না। ধর্মতলার মঞ্চ থেকেই মমতার হুঙ্কার, ‘খেলা হবে।’