প্রতিবেদন : সচিবজি, প্রধানজি, প্রহ্লাদচা, বিকাশ। নামগুলি খুবই চেনা সিনেমাপ্রেমী মহলে। জনপ্রিয় হিন্দি ওয়েব সিরিজ ‘পঞ্চায়েত’-এর সৌজন্যে মধ্যপ্রদেশের ছোট্ট গ্রাম দেশজুড়ে হয়ে উঠেছে বহুলপরিচিত। আর রিলের ‘ফুলেরা’র সঙ্গে প্রচুর মিল রিয়াল লাইফের ‘মহোদিয়া’র। ফুলেরায় যেমন শুরু থেকেই প্রধানজির বিরুদ্ধে উন্নয়ন না করার অভিযোগ ছিল গ্রামবাসীদের, মহোদিয়াতেও ছবিটা ঠিক একইরকম।
বিজেপির দখলে থাকা এই পঞ্চায়েতের প্রধানের কাজে একেবারেই খুশি নন গ্রামবাসীরা। ওয়েব সিরিজে যেমন পঞ্চায়েতের দায়িত্ব সামলাতেন প্রধানের স্বামী, এখানেও পঞ্চায়েতের দায়িত্বে প্রধানের ছেলে ভূপেন্দর ধনগড়ই। রাস্তা, বিদ্যুৎ, পানীয় জল, সবেতেই চরম অব্যবস্থা।
‘পঞ্চায়েত’ ওয়েব সিরিজের তুমুল জনপ্রিয়তার পর মহোদিয়া গ্রামটি হয়ে উঠেছে কার্যত ‘টুরিস্ট স্পট’। অনেকেই যাচ্ছেন সেখানে। আর কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে ক্ষোভের সুর। কাঠগড়ায় বিজেপির প্রধান। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় চলাফেরা করা হয়ে উঠছে দুঃসাধ্য। প্রায় সর্বত্রই চোখে পড়ছে কাঁচা রাস্তা। একটু বৃষ্টি হলেই চরম দুর্ভোগের কবলে পড়েন গ্রামবাসীরা। ‘ফুলেরা’র মতোই ‘মহোদিয়া’য় ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না। বারবার পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে বলা সত্ত্বেও, কোনও কাজই হয়নি গ্রামে।
মহোদিয়ার এক বাসিন্দা জানান, “আমাদের এখানে কোনও কাজ হয়নি। রাস্তা তো একেবারেই খারাপ। বহু কষ্টের মধ্যে দিয়েই চলা ফেরা করতে হয়। পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির দিকের রাস্তাটুকুই শুধু ভালোভাবে করা হয়েছে। অর্ধেকের বেশি সময় বিদ্যুৎ থাকে না বললেই চলে। জলের পাইপে জলও পাই না সব সময়। যখন ওদের মনে হয়, তখন দেয়। পঞ্চায়েতকে বারবার বললেও কিছুই কাজ হয় না। বারবার প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু কিছুই করে না।”
পাশাপাশি এক কৃষক জানিয়েছেন, “আমাদের এখানকার রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। জল হলেই এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করাটা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়ে। আমাদের এই রাস্তা ঠিক হবে না। পঞ্চায়েত এবং প্রধানকে বারবার বলেছি। কিন্তু কিছুই কাজ করেনি তারা।” অর্থাৎ, ওয়েব সিরিজে ‘ফুলেরা’ গ্রামে যে অনুন্নয়নের চিত্র ফুটে উঠেছে, তা যে বাস্তবে মহোদিয়ারই প্রতিচ্ছবি, সে কথা বলাই বাহুল্য।