প্রতিবেদন : আহমেদাবাদ বিমান-বিপর্যয়ের পর কেটে গিয়েছে এক মাস। চলছে তদন্ত। ইতিমধ্যেই প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ‘এয়ারক্রাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’ বা এএআইবি। এর মধ্যেই ফের সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে করা আরটিআই-এর প্রেক্ষিতে দেশের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন বা ডিজিসিএ জানিয়েছে, গত ৫ বছরে টেক অফের পর ৬৫টি ভারতীয় বিমানের ইঞ্জিন বন্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে! আপৎকালীন পরিস্থিতিতে গত সতেরো মাসে ১১টি ‘মে ডে কল’ করা হয়েছে পাইলটদের তরফে।
সম্প্রতিই আহমেদাবাদ দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে এএআইবি। ভারতের বিমান দুর্ঘটনার তদন্তকারী সংস্থা তদন্তে বারবার প্রযুক্তিগত ত্রুটির কথা অস্বীকার করা হলেও তদন্তকারীরা বিমানের ‘ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ’টি খতিয়ে দেখছেন। এই পরিস্থিতিতে এবার বোয়িং-সহ ভারতে চলাচলকারী সকল বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে ডিজিসিএ। আর এবার আরটিআই-এর ভিত্তিতে গত পাঁচ বছরের টেক অফের পর বিমানের যান্ত্রিক গোলোযোগ সংক্রান্ত একটি তথ্য দিল তারা। যা প্রকাশ্যে আসামাত্রই শুরু হয়েছে শোরগোল।
গত ১২ জুন আহমেদাবাদের মেঘানিনগরের বি জে মেডিক্যাল কলেজের ক্যান্টিনের উপর ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার এআই ১৭১ বিমান। দুর্ঘটনা নিয়ে ১৫ পাতার প্রাথমিক রিপোর্টে জানানো হয়, বিমানবন্দর থেকে টেক অফের এক সেকেন্ডের মধ্যেই জ্বালানির দু’টি সুইচই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে এই বিষয়টির উপর বিশেষ নজর রয়েছে তদন্তকারীদের। এর মাঝেই এবার ডিজিসিএ নির্দেশ দিয়েছে বোয়িং-সহ সকল বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ খতিয়ে দেখতে হবে। ডিজিসিএ স্পষ্ট জানিয়েছে, এই পরীক্ষা বাধ্যতামূলক এবং ২১ জুলাইয়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
পাশাপাশি জানা গিয়েছে, যেসব বিমানের মডেলগুলো পরীক্ষা করা হবে তার মধ্যে রয়েছে ৭৩৭, ৭৪৭, ৭৫৭, ৭৬৭, ৭৭৭ এবং ৭৮৭ এর মতো বোয়িং বিমান, ৭১৭ এবং ৭২৭ এর মতো পুরানো মডেলও। তালিকায় রয়েছে কিছু ম্যাকডোনেল ডগলাস বিমান (এমডি ১১ এবং এমডি ৯০ সিরিজ)। অনেক ভারতীয় ক্যারিয়ার এই বিমানগুলি পরিচালনা করে। এরই মধ্যে, গত পাঁচ বছরে ঠিক কতগুলি ভারতীয় বিমানে টেক অফের পর যান্ত্রিক গোলোযোগ দেখা গিয়েছে তা জানতে আরটিআই করা হয়। এরপরই ডিজিসিএ জানায়, গত ১ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে ৩১ মে ২০২৫ পর্যন্ত ১১টি মে ডে কল করা হয়। এরপরই বিমানগুলি জরুরি অবতরণ করে। পাশাপাশি গত পাঁচ বছরে প্রায় ৬৫টি বিমান টেক অফ করার পর সেগুলিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায়। তবে কি আহমেদাবাদ বিমান-বিভীষিকার আগেও এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারত? উঠছে প্রশ্ন।