প্রতিবেদন : সম্প্রতিই হরিয়ানায় প্রকাশ্যে এসেছে টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। নিজের বাবার হাতেই খুন হতে হয়েছে তাঁকে! তদন্তে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। ফের এল নতুন মোড়। রাধিকা যাদবের বান্ধবী দাবি করেছেন, পরিবারের লোকজন বিধিনিষেধ চাপাতেন রাধিকার উপর। পরিবারের তরফে সেই অভিযোগ খারিজ করা হয়েছে। এর মধ্যেই পুলিশের একটি সূত্র বলছে, খুন হওয়ার কয়েক দিন আগে সমাজমাধ্যমে নিজের অ্যাকাউন্ট ডিলিট করেছিলেন রাধিকা। তদন্তকারীদের একটা অংশ মনে করছে, পরিবারের সদস্যদের চাপেই তা করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। ফোনে সেই ডিলিট হয়ে যাওয়া তথ্যই এখন উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, রাধিকার মোবাইলের পাসওয়ার্ড তাঁর পরিবারের কেউ জানতেন না। সে কারণে মোবাইলটির তথ্য উদ্ধারের জন্য তা হরিয়ানা সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি, ইলেক্ট্রনিক্স এবং জনসংযোগ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মোবাইল থেকে ডিলিট করা মেসেজ, তথ্য উদ্ধার করা হবে। তদন্তকারীদের একটি সূত্র বলছে, খুন হওয়ার দিন কয়েক আগে সমাজমাধ্যম থেকে নিজের অ্যাকাউন্ট ডিলিট করেছিলেন রাধিকা। ওই পদক্ষেপ কি বাধ্য হয়ে করেছিলেন রাধিকা? উঠছে প্রশ্ন। বিষয়টি জানা গেলে রাধিকাকে খুনের মোটিভও স্পষ্ট হতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
ইতিমধ্যেই রাধিকার ইনস্টাগ্রামের কয়েকটি অ্যাকাউন্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেগুলি পরিচালনা করতেন এক বন্ধু। সেই প্রোফাইলগুলি এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ইতিমধ্যে রাধিকার এক বান্ধবী হিমাংশিকা সিংহ রাজপুত তাঁর পরিবারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। পুলিশ তাঁকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের কথাও ভাবছে। হিমাংশিকা সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো পোস্ট করে অভিযোগ করেছেন, রাধিকার সাফল্যকে হিংসা করতেন তাঁর বাবা। হিমাংশিকা বলেন, ‘‘আমার বন্ধুকে ওর বাবা মেরে ফেলল। পাঁচটি গুলি করা হয়েছে। চারটি গুলি লেগেছে রাধিকার। বন্ধুর জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল ওর বাবা। রাধিকার জীবনে স্বাধীনতা বলে কিছু ছিল না। সর্ব ক্ষণ ওকে অপমান সহ্য করতে হত।’’
উল্লেখ্য, রাধিকার পরিবার অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। যদি পরিবারে বিধিনিষেধ থাকত, তবে কি রাধিকা দেশ-বিদেশে টেনিস খেলতে যেতে পারতেন? প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন টেনিস খেলোয়াড়ের এক তুতো দাদা। তাঁর কথায়, ‘‘রাধিকা বহু দেশে খেলতে গিয়েছিল। সে সব দেশে যেতে ভিসা লাগত। অনেক খরচ ছিল। পরিবার টাকা না দিলে কী করে সম্ভব হত? ওঁরা অনেক পরিশ্রম করেছিলেন। রাধিকাও করেছিল। আমাদের পরিবারে এ রকম বিধিনিষেধ নেই।’’
রাধিকাকে খুনে গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর বাবা দীপক যাদব। তিনি জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছেন। দাবি করেছেন, লোকজন তাঁকে বিদ্রূপ করে বলতেন, কন্যার উপার্জনে জীবনযাপন করেন। রাগের বশেই রাধিকাকে খুন করেছেন তিনি।