মুম্বই: মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে বেশ কিছুদিন ধরেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে বৃহন্মুম্বই পুরনিগমের নির্বাচনে একসঙ্গে লড়তে চলেছে শিব সেনার উদ্ধব গোষ্ঠী এবং রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা। এই গুঞ্জনের মধ্যেই এবার একই মঞ্চে রাজ ও উদ্ধব ঠাকরে। মারাঠি অস্মিতাকে সামনে রেখে নিজেদের বিবাদ মিটিয়ে ফেললেন বালাসাহেব ঠাকরের ছেলে উদ্ধব এবং ভাইপো রাজ।
২০ বছর বাদে এক মঞ্চে এসে দুই ভাই মঞ্চে এসে বুঝিয়ে দিলেন, তাঁদের পয়লা নম্বর শত্রু বিজেপি। মুম্বইয়ের জনসভায় দুই ভাই শুধু একসঙ্গে দেখা দিলেন তা-ই নয়। আগামী দিনে একসঙ্গে লড়াই করার অঙ্গীকারও করে গেলেন। সমস্বরে তাঁরা বলে গেলেন, মহারাষ্ট্রের এবং মারাঠিদের স্বার্থে নিজেদের বিবাদ মিটিয়ে নিয়েছেন তারা। উদ্ধব দাবি করলেন, তারা একমঞ্চে এসেছেন এটাই সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। আগামী দিনে তারা একসঙ্গে থাকবেন, সেটা আরও তাৎপর্যপূর্ণ।
রাজ ঠাকরে বলেন, “যে কাজটা বাল ঠাকরে করতে পারেননি, অন্য অনেকে করতে পারেননি। সেটাই করে দেখিয়েছেন ফড়ণবিস। আমাদের এক করে দিয়েছে।” একই সুরে এদিনের মঞ্চ থেকে উদ্ধব বলেন,”বিজেপি গোটা দেশে সবকিছুকে এক করে দিতে চাইছে। হিন্দু বা হিন্দুস্তানে আপত্তি নেই। কিন্তু হিন্দি আমরা মানব না। বিজেপির কাছে আমরা হিন্দুত্বও শিখব না।”
দুই ভাইয়ের মধ্যের বিবাদ ঘুচতে শুরু করেছিল মহারাষ্ট্রের দেবেন্দ্র ফড়ণবিসের সরকার ‘ত্রিভাষা’ নীতির বিরোধিতার মাধ্যমে। হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগে একসুরে কথা বলা শুরু করেন রাজ ও উদ্ধব। সরকারের ওই নীতির প্রতিবাদে এক মঞ্চে এসে লড়াই করার ঘোষণা করে দিলেন শিব সেনার উদ্ধব এবং মহারাষ্ট্র নব নির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরে। ইতিমধ্যেই চাপে পড়ে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তা সত্ত্বেও শনিবার একমঞ্চে এলেন দুই ভাই।
প্রসঙ্গত, ঠাকরে পরিবারে ভাঙনের দু’দশক হতে চলল। সেই ২০০৫ সালে শিব সেনা ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন রাজ ঠাকরে। ২০০৬ সালে নিজের দল গড়েন বালাসাহেব ঠাকরের ভাইপো। তারপর সেভাবে উদ্ধবের পরিবারের ছায়াও মাড়াতে দেখা যায়নি রাজকে। নিতান্তই পারিবারিক বা অন্য কোনও অনুষ্ঠানে দেখা হয়ে গেলে একে অপরকে উপেক্ষা করারই চেষ্টা করেন দুই তুতো ভাই। কিন্তু শনিবার অন্য ছবি দেখা গেল।