নয়াদিল্লি : কেটে গিয়েছে ১৬ দিন। এখনও কাটেনি আহমেদাবাদের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার রেশ। বিমান-বিপর্যয় নিয়ে যেমন একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়েছে এয়ার ইন্ডিয়া, তেমনই আঙুল উঠেছে কেন্দ্রের দিকেও। এবার যাত্রী নিরাপত্তায় গলদ নিয়ে সংসদীয় কমিটির প্রশ্নের সম্মুখীন হল মোদী সরকার। আগামী ৮ জুলাই কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ সচিবকে তলব করল পরিবহণ এবং সংস্কৃতি মন্ত্রক সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটি।
বিমান দুর্ঘটনার পর থেকেই উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। কেন দুর্ঘটনা, কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কিনা, কোনওরকম গাফিলতি ছিল কিনা ইত্যাদি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ওই দুর্ঘটনার কিছুদিন আগেই পরিবহণ সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটি দেশের সার্বিক অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিল।
গত মার্চে রাজ্যসভায়, ভ্রমণ, পরিবহণ এবং সংস্কৃতি মন্ত্রক সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটি সংসদে একটি রিপোর্ট পেশ করে। ওই রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয়, অসামরিক বিমান পরিবহণের ক্ষেত্রে যে সুরক্ষা বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে, তা একেবারেই অপর্যাপ্ত।

ডিজিসিএ, এয়ারক্র্যাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো, ব্যুরো অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি তিন সংস্থা মিলিয়ে ২০২৪-২৫ বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ডিজিসিএ পেয়েছে ৩০ কোটি, এএআইবি পেয়েছে ২০ কোটি এবং ব্যুরো অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি পেয়েছে মাত্র ১৫ কোটি। যাত্রীসংখ্যার নিরিখে ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহণ শিল্প বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম। প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ যাত্রী বিমানে যাতায়াত করেন। সেখানে নিরাপত্তার জন্য বরাদ্দ কেন মাত্র ৬৫ কোটি? উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল সংসদীয় কমিটি। কিন্তু তাতে আমল দেয়নি কেন্দ্র। বাড়ানো হয়নি বাজেটও।
উল্লেখ্য, ঘটনাচক্রে এর কিছুদিন পরেই আসে ১২ জুন। আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে টেক অফের ৩০ সেকেন্ড পরেই ভেঙে পড়ে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১৭১ উড়ান। তোলপাড় শুরু হয় সাড়া দেশজুড়ে। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হন উক্ত সংসদীয় কমিটির বহু সদস্য। কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান মন্ত্রকের সচিবকে ৮ জুলাইয়ের বৈঠকে কঠোর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনে রিপোর্ট দেবে ওই সংসদীয় কমিটি।