কলকাতা: বেশ কিছু মাস ধরেই বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা তাঁদের দুরবস্থার কথা জানাচ্ছেন। ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝির জেরে তাদের ‘বাংলাদেশি’ বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে। চলছে অত্যাচার। সুরাহার জন্য রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। সম্প্রতি রাজস্থানের একটি ঘটনায় এই ইস্যু আরও জোরাল হয়ে উঠেছে। ইটাহারের অন্তত ৩০০ জনকে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার বিধানসভায় সেখানকার বিধায়কের মাধ্যমে এই খবর শুনে প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।(Mamata Banerjee)
Read More: বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের তাণ্ডবে আহত কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ মুখ্যমন্ত্রীর
ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক মোশারফ হোসেনের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, রাজস্থানে ‘বাংলাদেশি’ বলে ইটাহারের মান্নাই অঞ্চলের খিসাহার গ্রাম-সহ পাশ্ববর্তী গ্রামের প্রায় ৩০০ জনকে আটক করে রাখা হয়েছে। তাঁরা যোগাযোগ করেছেন বিধায়ক মোশারফ হোসেনের সঙ্গে। আর বিধায়ক ব্যাপারটি জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজিকে। আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়েছেন। মঙ্গলবার বিধানসভা অধিবেশনে এই প্রসঙ্গে রাজস্থানের বিজেপি সরকারকে মুখ্যমন্ত্রী(Mamata Banerjee) প্রশ্ন করেছেন, ”বাংলায় কথা বলে কী অপরাধ করেছি আমরা, এই বিজেপি সরকারের কাছে? ভয়ানক অবস্থা চলছে। এর প্রতিবাদে আমরা পথে নামব।”
রাজস্থানের বিজেপি সরকারকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ”গত কয়েক দিন ধরেই এটা চলছে। বাংলা ভাষায় কথা বললেই পুশব্যাক! আমাদের, বাঙালিদের সম্মান করলে তোমরাও সম্মান পাবে না। বাংলার ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক বাইরে কাজ করেন। বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশে পুশব্যাক করবে? তামিল বললে কি শ্রীলঙ্কায় পাঠাবে তাহলে? আর গোর্খা যারা তাদের কি নেপালে পাঠাবে? আসলে বাংলায় কথা শুনলেই এরা জ্বলে।” পাশাপাশি রাজস্থানে আটকে থাকা বাংলার শ্রমিকদের উদ্ধারের বিষয়ে রাজস্থানের মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা বলার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1937487239640133897
এই মর্মে বাংলা ভাষার ইতিহাস স্মরণ করিয়ে মমতার বক্তব্য, ”বিবেকানন্দ কী ভাষায় কথা বলতেন? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কী ভাষায় কথা বলতেন? তাহলে বলে দিন যে বাংলা ভাষা নিষিদ্ধ! শুনলাম দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা পড়ানো বন্ধ। শেমলেস ইস্যু! এর প্রতিবাদে আমরা পথে নামব। ভয়ানক অবস্থা চলছে।” এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ”প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই এসব (বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা) জানেন না। আমি তাঁকে জানাব।”