কলকাতা : বিজেপি বিধায়করা যে একেবারেই সৌজন্য ও রুচিশীলতার ধার ধারেন না, তা ফের নিজেরাই প্রমাণ করলেন তাঁরা। তাঁদের এহেন অসৌজন্যমূলক আচরণ রীতিমতো নজিরবিহীন রয়ে রইল বিধানসভার ইতিহাসে। বৃহস্পতিবার বিজেপি বিধায়কদের সমস্ত বক্তব্য মুছে দিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল বিধানসভায়!
অতীতেও বিজেপি বিধায়কদের আপত্তিকর কিছু শব্দ বা বাক্য মুছে দেওয়া হয়েছে বিধানসভার কার্যবিবরণী থেকে। কিন্তু বিজেপি বিধায়কদের সমস্ত বক্তব্য মোছার ঘটনা এই প্রথম। অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, ”বিলের উপর আলোচনায় বিজেপির শুধু আজকের গোটা পর্বের বক্তব্য এক্সপাঞ্জ (মুছে দেওয়া) করা হল।”
এদিন বিধানসভায় সেল ট্যাক্স সংক্রান্ত একটি বিলের উপর আলোচনা চলছিল। তাতে নিজেদের বক্তব্য রাখেন বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ, অশোক লাহিড়ী প্রমুখ। নিজেদের বক্তব্য পেশ হয়ে যাওয়ার পরই অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান বিজেপি বিধায়করা। তাতে ক্ষুব্ধ হন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি ও পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানান, এখনই বিজেপির বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করতে হবে। কারণ, এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ”এই নিয়ে তো রুল আছেই। এরপর একই জিনিস হলে বিরোধীদের সব বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করব। এটা অসৌজন্য।” এরপর তিনি এদিনের মতো বিজেপির সমস্ত বক্তব্য মুছে দেন কার্যবিবরণী থেকে। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বললেন, ”বিরোধী দলের মুখ্যসচেতক শংকর ঘোষ আগেই বলেছিলেন যে ওঁরা বক্তব্য রাখবেন কিন্তু তারপরই অধিবেশন ছেড়ে বেরিয়ে যাবেন। এটা তো অসংসদীয়। আমাদের প্রতি অকারণ অসৌজন্য দেখানো, অপমান করা। ওঁরা প্রশ্ন করবেন, অভিযোগ তুলবেন, অথচ তার জবাব না শুনে বেরিয়ে যাবেন, তাহলে আমরাই বা কেন জবাব দেব? আমাদের জবাব দেওয়ার দায় নেই। আজও তাঁরা একই কাজ করলেন।”
গেরুয়া শিবিরকে একহাত নিয়েছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও। ”বিজেপি এতদিন ধরে নানা অসৌজন্য দেখিয়েছে বিধানসভায়। দিনদিন তা বেড়ে যাচ্ছে। এবার তো তাঁরা নিজেদের বক্তব্য রাখার পর সরকারপক্ষের পালটা বক্তব্য রাখার আগেই বেরিয়ে গেল। তাই আমরা স্পিকারকে বলেছি, বিরোধীদের বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করতে। উনি আজকের জন্য তা করেছেন”, সাফ জানান তিনি।