আহমেদাবাদ : মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার পর কেটে গিয়েছে সপ্তাহখানেক। এখনও জানা যায়নি বিপর্যয়ের আসল কারণ। উঠে আসছে নানান তত্ত্ব।(Air Crash Investigation)আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই ১৭১ বিমান দুর্ঘটনায় যান্ত্রিক ত্রুটি ছাড়াও নাশকতার সম্ভাবনাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন তদন্তকারীরা। শুরু হয়েছে ‘৩৬০ ডিগ্রি’ তদন্ত।
বিমানের প্রি-ফ্লাইট, অর্থাৎ, উড়ানের আগে প্রস্তুতির কাজে যে সমস্ত কর্মীরা যুক্তি ছিলেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা মনে করছেন, ওই ফোনগুলি থেকে সন্দেহজনক আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বা তাদের বার্তা নিয়ে কোনও সূত্র মিলতে পারে।(Air Crash Investigation) এছাড়াও ওই সময়ের সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বিমানবন্দরের বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ।
গত ১২ জুন, বৃহস্পতিবার লন্ডনের গ্যাটউইকগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ড্রিমলাইনার বিমান আমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল বিমানবন্দর থেকে উড়ানের ৩০ সেকেন্ড পরেই মাটিতে আছড়ে পড়ে। বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনেরই মৃত্যু হয়। বিমান চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে আরও অন্তত ৩৯ জনের। দুর্ঘটনার তদন্ত করছে অসামরিক বিমান চলাচল নিয়ামক সংস্থা ডিজিসিএ। পৃথকভাবে দুর্ঘটনার তদন্ত করছে অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রেকের অধীন এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)। আমেরিকার ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এবং এনটিএসবি সম্মিলিতভাবে তদন্ত সহযোগিতা করছে। তদন্তে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল বিমানটির নির্মাতা বোয়িং এবং বিমানে ব্যবহৃত ইঞ্জিনের নির্মাতা জিই এয়ারোস্পেস।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1935645921783554530
বিমানের দুটি ব্ল্যাকবক্সই উদ্ধার করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। সেগুলি বিশ্লেষণের পাশাপাশি, গ্রাউন্ড লেভেলেও তদন্ত শুরু হয়েছে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে তদন্তকারীদের এক সূত্র উল্লেখ করে দাবি করা হয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত এআই ১৭১ বিমানটি ওড়ার আগে সেটির দেখভালের কাজে যে কর্মীরা ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। বিমানটি ওড়ার সবুজ সংকেত যে কর্মীরা দিয়েছিলেন, এমন বেশ কয়েকজনের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে দাবি ওই সূত্রের। তদন্তকারীরা মোবাইলগুলি যাচাই করে দেখতে চাইছেন।
পাশাপাশি, দুর্ঘটনাস্থলে কড়া নিরাপত্তা রয়েছে। মোবাইলে ছবি বা ভিডিও তোলাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যেই এক নয়া তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। প্রায় ১২ বছরের পুরনো এই বিমানের ডানদিকের ইঞ্জিনটি সম্প্রতি মেরামত করা হয়েছিল। তিন মাস আগে বদলানো হয় সেটি। সূত্রের খবর, ২০২৩ সালের জুন মাসে এই এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটির রক্ষণাবেক্ষণ পরীক্ষাও করা হয়েছিল। এই বছরের ডিসেম্বরেই ইঞ্জিন পরীক্ষা করার কথা ছিল। এপ্রিল মাসে এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের বিমা কভার ৭৫০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৫০ কোটি টাকা করা হয়। ক্লেমের পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা! ফলত এই দুর্ঘটনা বিমান বিমা ক্ষেত্রে শোরগোল সৃষ্টি করবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।