কলকাতা : স্বাস্থ্যক্ষেত্রের মানোন্নয়নের ফের নতুন মাইলফলক স্পর্শ করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা। বেসরকারি হাসপাতালে যে অস্ত্রোপচারের(Laser Surgery) খরচ ৭০ হাজার টাকা, এবার সরকারি হাসপাতালে তা হবে মাত্র ২ টাকায়! শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি।
Read More: ‘বাংলার বাড়ি’র দ্বিতীয় দফার টাকা পেতে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ৬২ হাজার পরিবার
বাংলার জেলা হাসপাতালে এই প্রথম শুরু হতে চলেছে লেজার সার্জারি।(Laser Surgery) সম্প্রতিই জেলা হাসপাতালে অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরিষেবার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারই প্রাথমিক ধাপ হিসাবে শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার এম আর বাঙুর হাসপাতালে বসল দশ লক্ষের ডায়োড লেজার মেশিন।
এপ্রসঙ্গে এম আর বাঙুর হাসপাতালের শল্য চিকিৎসা বিভাগের আধিকারিক ডাঃ মাখনলাল সাহা জানিয়েছেন, পূর্ব ভারতে সরকারি স্তরে প্রথম কোনও জেলা হাসপাতালে লেজার মেশিন দিয়ে অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষ এতদিন লেজার সার্জারির কথা ভাবতেও পারতেন না। এবার তা সম্ভব হতে চলেছে। উদ্বোধনের পরেই ডাঃ মাখনলাল সাহার নেতৃত্বে তিনজনের ফিসচুলা লেজার সার্জারি হয়েছে বাঙুরে।
ফিসচুলা পায়ুপথের অসুখ। যেখানে পায়ুপথের ভিতর থেকে বাইরের ত্বকে একটি অস্বাভাবিক চ্যানেল বা রাস্তা তৈরি হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, লেজারের মাধ্যমে এই সার্জারি হলে কাটাছেঁড়া রক্তক্ষরণ ছাড়াই অস্ত্রোপচার হবে। রোগী দ্রুত কাজে ফিরতে পারেন। ডাঃ মাখনলাল সাহা জানিয়েছেন, যাঁদের প্রথম লেজার সার্জারি হল, তার মধ্যে দুই তরুণী ও একজন যুবক রয়েছেন। এদিনের ওটিতে নার্সিং টিমের দায়িত্বে ছিলেন সিস্টার মন্দিরা দাশগুপ্ত। ডাঃ বি এন দাস সামলেছেন অ্যানাস্থেটিস্টের দায়িত্ব।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1923749214204592205
এহেন নতুন উদ্যোগে শুধুমাত্র রোগীরা উপকৃত হবেন না, হাসপাতালের স্নাতকোত্তর স্তরের শিক্ষার্থীদের লেজার প্রক্টোলজি সার্জারির প্রাথমিক জ্ঞান অর্জনের সুযোগও হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। বাঙুরের শল্য চিকিৎসা বিভাগ ধন্যবাদ জানিয়েছে হাসপাতালের সুপার ডাঃ শিশির নস্করকে। শিশিরবাবু জানিয়েছেন, “মাসছয়েক আগে আমাদের হাসপাতালে লেজার সার্জারি প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। সেসময় সার্জনরা প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।”
পাশাপাশি, হাসপাতালের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ জয়দীপ রায় জানিয়েছেন, প্রতি বুধবার ও শনিবার বাঙুরে সার্জিকাল ওপিডিতে ডাক্তার দেখিয়ে এই অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি হওয়া যাবে। খুশি রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। তাঁর কথায়, “সরকারি হাসপাতালে পরিষেবার উন্নয়নে আমরা নিরন্তর কাজ করে চলেছি।” অদূর ভবিষ্যতে অন্য জেলা হাসপাতালেও এই মেশিন বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে নবান্নের, এমনই আভাস দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন।