কলকাতা : মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের আগেই বড়সড় ভাঙন ধরল বঙ্গ বিজেপিতে। দীর্ঘদিনের জল্পনার পর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রাক্তন সাংসদ জন বার্লা।(John Barla) বৃহস্পতিবার কলকাতার তৃণমূল ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করলেন তিনি। আগামী বছরই বিধানসভা নির্বাচন বাংলায়। এমতাবস্থায় বার্লার তৃণমূলে যোগদানে বঙ্গ বিজেপি বড় ধাক্কা খেল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
Read More: জঙ্গি হামলায় শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে রাজ্যজুড়ে বিশেষ কর্মসূচি তৃণমূলের
মোদী সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী বার্লা।(John Barla) পাশাপাশি আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদও ছিলেন তিনি। গত লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। পরিবর্তে টিকিট দেওয়া হয় মনোজ টিগ্গাকে। আর সেই থেকেই ক্ষোভ মাথাচাড়া দেয় বার্লার মনে। প্রায়ই ‘বেসুরো’ হচ্ছিলেন তিনি। জানুয়ারি মাসে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রিত ছিলেন বার্লা। সেই সময় প্রশ্ন করা হলে জানান, মুখ্যমন্ত্রীকে চা-বলয় এবং জনজাতিদের সমস্যার কথা জানাতে গিয়েছেন। আর তার চার মাসের মাথাতেই তিনি বিজেপি ছেড়ে যোগ দিলেন তৃণমূলে।
এদিন বার্লা জানান, “পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। আজ উনি আমাকে এত বড় সুযোগ দিয়েছেন। নিজের সমাজের জন্য কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন আমাকে। কেন আমি এই সিদ্ধান্ত নিলাম, জানাতে চাই। ছ’-সাত মাস আগে থেকেই কথা চলছিল। দিদিও মাঝে ফোন করেছিলেন। কাজ করতে বলছিলেন। আমি চাইছিলাম, নিজের ক্ষেত্র, চা-বাগান নিয়ে যেমন করতাম…মন্ত্রী ছিলাম যখন কাজ করতে গিয়ে বাধা পেতাম।”
পাশাপাশি, তাঁর কথায়, “রেলের জমিতে ১০০ শতাংশ অনুদান নিয়ে, ১৬০ কোটির হাসপাতাল তৈরি করতে গিয়েছিলাম। রেল জমিও বেছে দিয়েছিল। শুধু মউ স্বাক্ষর বাকি ছিল। কিন্তু এখন যিনি বিরোধী দলনেতা, উনি যেভাবে কাজ আটকে দেন…মানুষ আশীর্বাদ দিয়ে আমাকে মন্ত্রী বানান। কিন্তু নিজেদের দলের লোকই, এখনকার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী…এখান থেকে ফোন গেল আর আমাকে আটকে দেওয়া হল। এভাবে উন্নয়নমূলক কাজ আটকে দেওয়া হলে কে এমন দল করবে? মানুষ আমাকে নির্বাচিত করে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু আমাকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছিল না। এমন দল কেন করব, যারা আমাকে বাধা দেয়?”
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1922998317312618746
ঘাসফুল নেতৃত্বের আশা, বার্লার তৃণমূল স্তরে কাজ করার অভিজ্ঞতা ও চা বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা দলকে শক্তিশালী করে তুলবে। তাঁর হাতে দলের পতাকা তুলে দেওয়ার আগে অরূপ বলেন, “বিজেপি-তে বীতশ্রদ্ধ হয়ে মা-মাটি-মানুষের দলে যোগ দিচ্ছেন কেন, তা নিজেই বলবেন উনি। একটা একটা করে উইকেট পড়ছে। চা-বাগানের আন্দোলনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত তিনি। ইউনিয়ন নেতা তিনি, আদিবাসী নেতাও। জনমানসে ভাবমূর্তি অত্যন্ত ভাল। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। দলনেত্রী তাঁকে মা-মাটি-মানুষের হয়ে কাজ করতে অনুমোদন দিয়েছেন।” সুব্রত বক্সী বলেন, “জন বার্লার হাত ধরে চা বাগানে নিশ্চিত ভাবে আমাদের দল শক্তিশালী হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তাঁকে রাজ্য কমিটিতে কাজ করাবেন। দেওয়া হবে চা বাগানের দায়িত্বও।