তেহট্ট : উধমপুরে জঙ্গিদের গুলিতে শহিদ হয়েছিলেন বঙ্গসন্তান ঝন্টু আলি শেখ। শনিবার সকালে চোখের জলে ঝন্টুকে শেষ বিদায় জানাল তাঁর পরিবার-পরিজন ও গ্রামের মানুষ। বীর শহিদ জওয়ানকে শেষবার দেখতে তেহট্টের পাথরঘাটা দেখা গেল জনজোয়ার। বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন সকলেই।
সম্প্রতিই পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। তারই মাঝে উধমপুরে শুরু হয় সেনা-জঙ্গির গুলির লড়াই। সেখানেই শহিদ হন বাংলার বীর সন্তান ঝন্টু আলি শেখ। গত বৃহস্পতিবার ঝন্টুর মৃত্যুসংবাদ পান তাঁর পরিবারের লোকজন। নদিয়ার তেহট্টের পাথরঘাটার বাসিন্দা ঝন্টুর দেহ শুক্রবার রাতে পৌঁছয় কলকাতা বিমানবন্দর। সেখান থেকে কফিনবন্দি দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বারাকপুর সেনা ছাউনিতে। দেওয়া হয় গান স্যালুট। এরপর শনিবার সকালে পাথরঘাটার গ্রামের বাড়িতে ঝন্টুর কফিনবন্দি দেহ পৌঁছয়।
ঝন্টুর বৃদ্ধ বাবা ছেলের কফিনবন্দি মরদেহের সামনে বুকফাটা কান্নায় ভেঙে পড়েন। চোখের জল বাঁধ মানছে না মায়েরও। সদ্য স্বামীহারা ঝন্টুর স্ত্রীর চোখেও জল। তিনি বলেন, “আমার সন্তানরা বাবাকে হারিয়েছে। দোষীর কঠোর শাস্তি চাই।” গত ২০০৮ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তারই মাঝে সংসার পাতেন। স্ত্রী ও দুই সন্তানও রয়েছে তাঁর। বছর দেড়েক আগে কাশ্মীরে পোস্টিং। তাই স্ত্রী ও দুই সন্তানও কাশ্মীরেই থাকতেন তাঁরা। ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আসতেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসেও স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে বাবা-মায়ের কাছে আসেন ঝন্টু। সেই শেষবার আসা। এবার যে এভাবে কফিনবন্দি হয়ে গ্রামের ছেলে ফিরবেন, তা স্বপ্নেও ভাবেননি স্থানীয়রা। ঝন্টুর দাদা রফিকুল শেখও ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত। ছোট ভাইয়ের কফিনবন্দি দেহ নিজের কাঁধে করে গ্রামে নিয়ে ফেরেন তিনি। শহিদ ভাইয়ের আত্মত্যাগে গর্বিত দাদা রফিফুল।