প্রতিবেদন : প্রয়াত হয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। শোকস্তব্ধ সারা বিশ্ব। পোপের প্রয়াণে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকল খ্রিস্টান ভাইবোনদের সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। শোকজ্ঞাপন করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
সোমবার ভ্যাটিকানের তরফে কার্ডিনাল কেভিন ফেরেল জানান, সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে প্রয়াত হয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। সমবেদনা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করেছেন মমতা। “রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রধান, পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে আমি শোকাহত। ক্যাথলিক সমাজে সম্মানীয় স্থান পেয়েছেন পোপ। অগণিত খ্রিস্টান তাঁকে ধর্মীয় নেতা হিসাবে মানেন। ভারত এবং বিশ্বের অন্যান্য স্থানে আমার সকল খ্রিস্টান ভাইবোনদের আমার সমবেদনা”, লিখেছেন তিনি।
পাশাপাশি, শোকপ্রকাশ করেছেন অভিষেকও। শোকবার্তায় তিনি লিখেছেন, “পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যু কেবল বিশ্বের ক্যাথলিকদের জন্যই নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্যও অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি সাহস, সহনশীলতা এবং নৈতিক স্বচ্ছতার প্রতীক ছিলেন। ইস্টারে তিনি বার্তা দিয়েছিলেন, ধর্মের স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা ছাড়া শান্তি থাকতে পারে না। এই বার্তা বিবেকের আয়না হিসেবে চিরকাল আমাদের কাছে থাকবে।”
বিগত দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।গত ফেব্রুয়ারি মাসেই সংকটজনক অবস্থায় ইটালির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল পোপ ফ্রান্সিসকে। ২১ বছর বয়সে তার একটি ফুসফুসের অংশ বাদ দিতে হয়। যার জেরে সমস্যা ছিলই। সম্প্রতি তা গুরুতর পরিস্থিতিতে গিয়ে দাঁড়ায় শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানান, তাঁর দুটি ফুসফুসই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। পাশাপাশি বুকের এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষার রিপোর্টও ছিল উদ্বেগজনক।
কিছুদিন আগে খানিকটা সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন পোপ। চিকিৎসকরা তাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেন। অসুস্থতার কারণে গুড ফ্রাইডের উপাসনা বা ইস্টারের বিশেষ উপাসনা, কোনও কিছুতেই উপস্থিত থাকতে পারেননি তিনি। গত রবিবার অসুস্থতা সত্ত্বেও সকলকে চমকে দিয়ে ইস্টারের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। হাজির হন ইস্টারের বিশেষ জমায়েতে। সেন্ট পিটার্স স্কোয়্যারে ৩৫ হাজারেরও বেশি পুণ্যার্থীর দিকে হাত নাড়েন। ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার বারান্দা থেকে বলেন, “ভাই এবং বোনেরা, হ্যাপি ইস্টার।” কিন্তু তার পরের দিনই চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন তিনি। উল্লেখ্য, ল্যাটিন আমেরিকা থেকে প্রথম পোপ হয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন ফ্রান্সিস। নিজের কার্যকালেও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও মোড় ঘোরানো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। সারাজীবন রত থেকেছিলেন ঈশ্বর এবং চার্চের সেবায়।