কলকাতা: সুপ্রিম রায়ে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক। চাকরিহারাদের একমাত্র আশা ছিল রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ। মুখ্যমন্ত্রী কী ব্যবস্থা নেন তার দিকেই তাকিয়ে ছিলেন তাঁরা। অবশেষে সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কর্মহীন শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, “২ মাসের মধ্যে যোগ্যদের চাকরি নিশ্চিত করবে সরকার। আপনাদের সার্ভিস ব্রেক হবে না। আপনাদের চাকরির দায়িত্ব সরকারের।” ‘যোগ্য’দের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর আরও বার্তা, “নোটিস না পাওয়া পর্যন্ত আপনারা স্কুলে যাবেন, ভলান্টিয়ারিলি কাজ করুন, কেউ আটকাবে না। মনে রাখবেন, ২ মাস কষ্ট করলে ২০ বছর সুফল পাবেন।”
যোগ্যদের চাকরি কেন বাতিল যাবে! সে প্রশ্নও তোলেন এদিন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি যোগ্যদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ”আপনাদের শোকে আমরা পাথর। আমরা হৃদয়হীন নই। দায় ঝেড়ে ফেলতে পারি না। ভিক্ষা করে আপনাদের খেতে হবে না। স্বেচ্ছায় কাজ করুন, কেউ বারণ করবে না। যতদিন না সুপ্রিম কোর্ট যোগ্যদের তালিকা দিচ্ছে, যতদিন না নোটিস পাচ্ছেন, ততদিন বাচ্চাদের পড়ান।”
এদিন মমতা আরও বলেন, “আমার প্রতিশ্রুতি, যোগ্যদের চাকরি কারও কেড়ে নিতে দেব না। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত চলছে। যাঁরা ভালো ফলাফল করে এসেছেন, তাঁদের সবাইকে শীর্ষ আদালত ‘চোর’ বলছেন! এটা হয়? রায়ের পিছনে কোনও খেলা নেই তো? বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদবে না, তা আমরা আশা করি।”
তবে এদিন নেতাজি ইন্ডোর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘অযোগ্য’দের নিয়েও মন্তব্য করে বার্তা দেন। অযোগ্যদের উদ্দেশে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ”আগে যোগ্য চাকরিহারাদের জন্য ব্যবস্থা করি। তবে কেউ অযোগ্য প্রমাণিত হলে কিছু করার নেই।”
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ প্যানেল ‘অসাংবিধানিক’, ‘প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি’ বলে বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তাতেই রাতারাতি চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক। এর মধ্যে তালিকায় রয়েছেন প্রায় ৭ হাজার ‘অযোগ্য’ শিক্ষক। মমতা এদিন যোগ্য-অযোগ্য শিক্ষকদের উদ্দেশ্যেই বার্তা দিলেন।