কলকাতা : মুখ থুবড়ে পড়ল বিজেপির চক্রান্ত। রবিবার রামনবমীকে কেন্দ্র করে বাংলায় অশান্তি সৃষ্টির ব্লু প্রিন্ট বানিয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু তাতে ‘লাভ’ হল না কিছুই! সমস্ত প্ররোচনার মুখে ছাই দিয়ে সারা রাজ্যজুড়ে পালিত হল সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যের রামনবমী। মিছিল থেকে সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিল তৃণমূল কংগ্রেস।
মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই বলেন, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।” এদিন কলকাতা থেকে জেলায় জেলায় সম্প্রীতির মিছিল ও শোভাযাত্রায় ছিল রীতিমতো উৎসবের আবহ। সম্প্রীতির চিরাচরিত পীঠস্থান এই বাংলার মাটি। সেই বার্তাই ছড়িয়ে দিলেন তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়ক ও নেতারা। সর্বত্রই ছিল পুলিশের কঠোর নজরদারি। নিরাপত্তায় বিন্দুমাত্র ফাঁক রাখা হয়নি। নির্বিঘ্নে আয়োজিত হল শোভাযাত্রা ও মিছিল।
রবিবার উত্তর কলকাতার ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির সামনে থেকে শুরু হয় তৃণমূল যুব কংগ্রেসের শোভাযাত্রা। জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ মজিদের উদ্যোগে ও প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের নেতৃত্বে স্বামী বিবেকানন্দর সিমলা স্ট্রিটের বাড়িতে গিয়ে সেই মিছিল শেষ হয়। সর্বধর্ম সমন্বয়ের এই মিছিলে মুসলিমরা যেমন ছিলেন, তেমনই ছিলেন হনুমান মন্দিরের পুরোহিতরাও।
পাশাপাশি, মালদহে শ্রীরামচন্দ্রকে সামনে রেখে চলা বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় পুষ্পবৃষ্টি করেন মুসলিম ধর্মালম্বীরা। মিষ্টিমুখও করান। এমনই সংহতির চিত্র দেখা গিয়েছে হাওড়ার সালকিয়া, হুগলির শ্রীরামপুর, চাঁপদানি থেকে শুরু করে বীরভূমের সিউড়ি, বোলপুর, রামপুরহাট ও বাঁকুড়ার বিভিন্ন জায়গায়। হাওড়ার সালকিয়ায় সর্বধর্ম সমন্বয়ের মিছিলে হাঁটেন তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী। রামপুরহাটে ছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। সিউড়িতে মিছিল করেন সাংসদ শতাব্দী রায়, বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। উৎসবের মিছিলে ছিলেন কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা৷ বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখও অংশ নেন রামনবমীর সর্বধর্ম সমন্বয়ের মিছিলে।
বীরভূমের বোলপুরে রামনবমীর মিছিলে হাঁটেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। শ্রীরামপুরে হনুমান মন্দিরে পুজো দেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। চাঁপদানিতেও রামনবমীর উৎসবে অংশ নেন তিনি। এদিন সর্বত্র নিরাপত্তার আয়োজনে শীর্ষ পদাধিকারী ও অফিসারদের নেতৃত্বে বিশাল সংখ্যক পুলিশ রাস্তায় মোতায়েন করা হয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে হাওড়া, আসানসোল, বারাসত, বহরমপুরে হাতে অস্ত্র নিয়ে মিছিল করলেও মানুষ তা উপেক্ষা করেছে। বাংলার সংস্কৃতি ও কৃষ্টির কথা উল্লেখ করে রামনবমীর শুভেচ্ছাবার্তায় সম্প্রীতি ও সংহতির ধারা বজায় রাখার আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।