নয়াদিল্লি : মোদী-জমানায় দেশের অর্থনীতি যে ক্রমশ অন্ধকারের পথে, তা প্রমাণ হয়ে গেল আরও একবার। আয়ের তুল্যমূল্য অঙ্কে প্রায় ২০০ বছর বা ১৮২০ সালে পিছিয়ে গিয়েছে দেশের মধ্যবিত্ত! আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন (আইএলও) প্রকাশিত এই পরিসংখ্যান তুলে মোদী সরকারকে তুলোধোনা করল কংগ্রেস। দেশবাসীকে সর্বক্ষণ ‘আত্মনির্ভর ভারতে’র স্বপ্ন দেখিয়ে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার কথাও বলছেন। কিন্তু আইএলও-র তথ্য ঠিক বিপরীত কথা বলছে। তাদের রিপোর্ট সাফ জানাচ্ছে, ২০২৩ সালে জাতীয় আয়ের নিরিখে ভারতের মধ্যবিত্ত শ্রেণির রোজগার পৌঁছে গিয়েছে স্বাধীনতা-পূর্ব, এমনকী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলের পরিস্থিতিতে!
উক্ত পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করেই বুধবার ‘এক্স’ হ্যান্ডলে কেন্দ্রের এনডিএ সরকারকে একহাত নিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তাঁর অভিযোগ, গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে অবহেলা করছে কেন্দ্র। খাড়গে সরাসরি লিখেছেন, “স্বাধীন ভারতে গত ৭৮ বছরে আর কোনও সরকার সাধারণ মানুষকে আর্থিকভাবে এতটা পঙ্গু করে ছাড়েনি। আর্থিক বৈষম্য এর আগে কখনও এমন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেনি। ধনকুবেররা আরও সম্পদশালী হয়ে উঠছে। গরিব সর্বস্বান্ত হচ্ছে।”
এরপর আইএলও-এর তথ্যকে হাতিয়ার করে কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগ, “একে তো নামমাত্র বেতন মিলছে। তার মধ্যে বেতন বৃদ্ধির হারও প্রায় শূন্যের কাছে। সব মিলিয়ে মধ্যবিত্তের জীবন নরক হয়ে উঠেছে! আজ মধ্যবিত্তের উপার্জনের দশা ব্রিটিশ রাজেরও আগে, সেই ১৮২০ সালের অবস্থায় ফিরে গিয়েছে। আধুনিক ডিগ্রি বা সুপ্রশিক্ষিত চাকরি থাকা সত্ত্বেও তাঁরা যে বেতন পান, তা গোটা বিশ্বে সপ্তম নিম্নতম।”
পাশাপাশি, আইএলও-র ওয়ার্ল্ড ইনইকুয়ালিটি ডেটাবেস রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে তাঁর আরও দাবি, ২০০৬ সালে বেতন বৃদ্ধির হার ছিল ৯.৩ শতাংশ। ২০২৩ সালে সেটাই কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ০.১ শতাংশে। ঘণ্টা পিছু গড় উপার্জন হিসেবে ভারতীয় শ্রমিকরা যা হাতে পান, তা গোটা বিশ্বের নিরিখে পঞ্চম সর্বনিম্ন। এখানেই থেমে থাকেননি বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা। “সাধারণ মানুষকে কর, মুদ্রাস্ফীতি ও আর্থিক অব্যবস্থার বোঝা বইতে হচ্ছে। গরিব, মধ্যবিত্ত ও অবহেলিত মানুষ ডুবছে। আর মোদী সরকার সবকা সাথ সবকা বিকাশের গালভরা স্লোগান দিয়ে বেড়াচ্ছে”, কেন্দ্রকে কটাক্ষ করে জানিয়েছেন খাড়গে।