নয়াদিল্লি: ২০২৪ সালের জুন মাসেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই বৈঠকের পরেই ‘ফরাক্কা-গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি’ নবীকরণ এবং তিস্তার জল ভাগাভাগি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে রাজ্যকে বাদ দিয়ে যেন কোনো সিদ্ধান্ত না হয় তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লেখেন মমতা। এবার মমতার সেই দাবি সংসদে তুলে ধরলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। (Ritabrata Banerjee)
Read More: নজরকাড়া পারফরম্যান্সের পর ভিগনেশকে পরামর্শ ধোনির, জানালেন বাবা শ্রীরাগ
মমতার দীর্ঘদিনের দাবিকে টেনে এনে রাজ্যসভায় ঋতব্রত(Ritabrata Banerjee)বলেন, ফরাক্কা চুক্তির ফলে বাংলার বহু মানুষকে সর্বস্ব খোয়াতে হয়েছে। আবার তিস্তার জলের উপর উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলার জীবনযাত্রা নির্ভর করে। তাই এই দুই নদী নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বাংলার সঙ্গে আলোচনা করা উচিত কেন্দ্রের। তিনি বলেন, “ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে কোনও জলচুক্তি হলে সেটার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে বাংলার মানুষ। গত কয়েক বছরে পূর্ব ভারতে নদীর গতিপ্রকৃতি বদলে গিয়েছে। আর সেটার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে বাংলার উপর।”
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1904554272496423373?s=19
ঋতব্রত জানান, তিস্তার জলের উপর উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলার মানুষ নির্ভরশীল। পানীয় জল থেকে সেচের কাজ হয় এই পাহাড়ি নদীর জলে। সেই কারণেই জল বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া উচিত হবে না বলে মত তৃণমূল সাংসদের। তাঁর কথায়, বাংলার সম্মতি ছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে কোনওরকম জলচুক্তিই করা উচিত নয়। একই সঙ্গে ইন্দো-ভুটান জলবন্টন কমিটি গড়ার প্রয়োজনীয়তার পক্ষেও সওয়াল করেন ঋতব্রত।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা জলচুক্তি হয় ভারতের। পরবর্তী কালে দেখা গিয়েছে, গঙ্গার ওই চুক্তিতে আসলে বাংলার সমুহ ক্ষতি হয়েছে। একাধিক জেলা বছর বছর প্লাবিত হচ্ছে। চুক্তির পর তিন দশকে রাজ্যের বহু জমি গিয়েছে পদ্মা এবং গঙ্গার গ্রাসে। রাজ্যের অভিযোগ, বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি হলেও সেসময় যে ভাবে নিয়মিত গঙ্গায় ড্রেজিং করার কথা ছিল সেটা করা হয় না। চুক্তির টাকাও দেওয়া হয়নি রাজ্যকে। তাই এই চুক্তি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী গত বছরেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানান,‘‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অংশগ্রহণ ছাড়া তিস্তা এবং ফরাক্কার জলবণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কোনও রকম চুক্তিতে আমার তীব্র আপত্তি রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বার্থ নিয়ে কোনও আপস করব না।’ এবার মমতার এই দাবিকেই পুনরায় তুলে ধরলেন রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।