কলকাতা: রাজ্যের কল্যাণীতে তৈরি হয় এইমস।(AIMS)গরিবদের চিকিৎসার সুবিধার্থে এইমস তৎপর এমনই ইঙ্গিত দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অক্টোবরে হৃদরোগ বিভাগ চালু হয় কল্যাণী এইমসে। সেখানেই ক্যাথল্যাব ও হার্ট-লাং মেশিনের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই পদক্ষেপ বাংলার গরিবদের জন্য বিরাট উপহার বলেও উল্লেখ করে প্রচার করেন তিনি। আদতে চিত্রটা কিন্তু অন্যরকম। কল্যাণী এইমসে চিকিত্সা করাতে গিয়ে মধ্যবিত্তের পকেট ফাঁকা।
Read More: চলতি অর্থবর্ষে বীরভূমে স্বাস্থ্যসাথীতে বিপুল বরাদ্দ রাজ্যের, খুশি জেলাবাসী
দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা এই উৎকর্ষকেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে গিয়ে খরচ হচ্ছে মোটা টাকা। শুধুমাত্র চিকিৎসকের ফি বাবদ কোনও খরচ হচ্ছে না। তবে রোগ নির্ণয়ের জন্য কোনও পরীক্ষা হোক বা ওষুধপত্র—মেটাতে হচ্ছে চড়া বিল। যেমন, হৃদরোগে স্রেফ অ্যাঞ্জিওগ্রামের খরচ প্রায় ১০ হাজার টাকা। তাই গরিব মানুষেরা, যারা চিকিৎসা করাতে আসছেন তাদের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় হতাশ হতে হচ্ছে।
আরও জানা যাচ্ছে, পরিস্থিতি এমন যে প্রতি মাসে হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে আসা প্রায় ৬০০ রোগীকে ‘রেফার’ করে দেওয়া হচ্ছে ৪ কিমি দূরে রাজ্য সরকারি গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে। বহু রোগী আবার এইমসে খরচের বহর দেখে স্বেচ্ছায় যেতে চাইছেন অন্য হাসপাতালে।

এ নিয়ে বিতর্ক উঠতেই প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য সরকারি হাসপাতালে রোগ পরীক্ষা সহ ওষুধপত্রের জন্য তো কোনও খরচ হয় না। তাহলে কেন্দ্রীয় হাসপাতালে(AIMS )এত চড়া বিল কেন? চিকিৎসক ও পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর অভাবে এমনিতেই সমস্যায় জর্জরিত কল্যাণী এইমস। সেখানে আউটডোরে মাত্র ১০ টাকায় নাম রেজিস্ট্রেশন করে ডাক্তার দেখানো যায়। কিন্তু ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতেই ব্যাপক হয়রানির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে।
রোগীদের একাংশের অভিযোগ, যেকোনো ভাবেই সহজে ডাক্তার দেখানোর জন্য ‘বুকিং’ পাওয়া যায় না। তার উপর রয়েছে আগে আসার ভিত্তিতে টোকেনের ব্যাপার। ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন, সাত-দশ দিন চেষ্টা করে তবেই নাম লেখানো সম্ভব। একদিকে আউটডোরে এত সাধ্যসাধনা, অন্যদিকে হৃদরোগ বিভাগে একের পর এক রোগীকে ‘রেফার’ করে দেওয়া হচ্ছে।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1903026458169315507?s=19
এইমসের এক কর্তা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড এই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করে না। এখানে চিকিৎসকের ফি ছাড়া বেশিরভাগ পরিষেবা অর্থের বিনিময়ে মেলে। কোনও রোগীর অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন থাকলে সেক্ষেত্রেও টাকা গুনতে হয়। এমনকী বেড ভাড়া থেকে বেশিরভাগ ওষুধের খরচ বহন করতে হয় রোগীর পরিবারকেই। অথচ এইমসকে সরকারি হাসপাতাল ভেবে এমন বহু মানুষ আসেন, যাঁদের আর্থিক অবস্থা দুর্বল। তাই রোগীদের স্বার্থে অন্যান্য হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় অনেককে।