কলকাতা : আরও একবার প্রকট হয়ে উঠল বঙ্গ বিজেপির আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। খোদ পদ্ম-বিধায়কের কথাতেই চরম অস্বস্তিতে পড়ল দল। বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে প্রায় সবদিনই বয়কট করেছে গেরুয়া শিবির। নানা ইস্যুতে অধিবেশন কক্ষে বিশৃঙ্খলা তৈরির পর ওয়াকআউট করে বেরিয়ে গিয়েছেন বিজেপি বিধায়করা। নিয়ম ভাঙার জন্য কয়েকজনকে সাসপেন্ডও করেছেন অধ্যক্ষ। আর তাতে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে বাজেট আলোচনার একটিতেও অংশ নেয়নি বিজেপি।
জনপ্রতিনিধি হিসেবে এই কাজ ঠিক হয়নি বলেই মনে করছেন চাকদহের বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ। তাঁর মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই বিপাকে শুভেন্দু। চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ বলেন, “আমার ব্যক্তিগত অভিমত, যেটা হচ্ছে, এই যে স্বাস্থ্যদফতর নিয়ে বাজেটের উপর যে আলোচনা হল বা শিক্ষা নিয়ে হল, সেই জায়গাটায় আমরা থাকতে পারলাম না। আমরা বয়কট করে বেরিয়ে এলাম। আমি বলব, এটা আমাদের ভুলই হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ দুটো বাজেট সেই জায়গাটায় আমরা থাকতে পারলাম না। আগামী দিনে আমাদের নিশ্চয়ই এই নিয়ে চর্চা করতে হবে, আলোচনা করতে হবে।”
পাশাপাশি, তিনি জানান, “বিরোধী দলনেতার সঙ্গে আমাদের সবাইকে বলতে হবে যে মানুষের কথা আমরা বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলব যেখানে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য একটা গুরুত্বপূর্ণ সাবজেক্ট, সেই জায়গাটায় আমরা বিধানসভা বয়কট করলাম বা অফ থাকলাম এটা আমার ব্যক্তিগত মত, আমার মনে হয় আমাদের ঠিক হয়নি। আমাদের থাকা উচিত ছিল, বলা উচিত ছিল। অন্য কোনও বিষয়ের উপর বা অন্য কোনও পদ ধরে আমাদের বয়কটগুলো করলে ভাল হত। এই দুটি বিষয়ের উপর মূলত থাকাটা আমাদের জরুরি ছিল।”
বঙ্কিম ঘোষের কথায়, “বিধানসভাটা হচ্ছে বিরোধীদের জন্য। আমাদের জিতিয়ে বিধানসভায় পাঠিয়েছে মানুষের কথা বলার জন্য। ফলে মানুষের কথা আমাদেরই বিধানসভায় বেশি করে তুলতে হবে, বলতে হবে। কিন্তু সরকার যে ভূমিকা নেয় সেই ভূমিকার জন্য আমাদেরও, সরকার আমাদের ফাঁদে ফেলে দেয়। সেই ফাঁদে আমরা কখনও কখনও পা দিয়ে ফেলি। কিন্তু আমার মনে হয়, আগামী দিনে এসব নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। পুরো সময়টা বিধানসভায় থেকে আমাদের বিক্ষোভ, প্রতিবাদ করতে হবে। বিধানসভায় থেকে যদি আমরা এটা করতে পারি, তাহলে মানুষের কথা বলতে পারব। আমার মনে হয়, আগামী দিনে বিরোধী দলনেতাকে আমাদের যে বাজেটের যে সময় আছে, সেই সময়টুকু রাজ্যের মানুষের জন্য আমাদের বলতে হবে। কথায় কথায় আমাদের বয়কট করে বেরিয়ে এলে হবে না।”
উক্ত ইস্যুটিতে বিজেপি বিধায়কের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। “আমি এ নিয়ে একমত। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের কর্তব্য, মানুষের কথা বলব। ভাগাভাগির রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক উসকানি, টিভিতে মুখ দেখানো জনপ্রতিনিধির কাজ নয়। তাতে মানুষকে অপমান করা হয়। কিন্তু বিরোধীরা আজকাল সেটাই করছেন বেশি”, বলেন তিনি।