কলকাতা: রূপনারায়ণে ইলিশের(Hilsa) আনাগোনা নেই বললেই চলে। এর মধ্যেই একাধিকবার অভিযোগ উঠেছে, নদীর মোহানায় যন্ত্রচালিত নৌকা ও ছোট ট্রলার ইলিশ ধরে নিচ্ছে। ফলে বিপরীত স্রোতে মিষ্টি জলে গঙ্গা ও রূপনারায়ণ-সহ বেশ কিছু নদীতে ডিম পাড়তে আসছে না ইলিশের দল। বাংলাদেশ ও মায়ানমারের দিকে চলে যাচ্ছে ইলিশের ঝাঁক। এবার তাই রূপনারায়ণে ইলিশের সংরক্ষণ নিয়ে নয়া ব্যবস্থা নিল রাজ্য। এই নদে ইলিশের সংরক্ষণ বাড়াতে এবার ৬ দফা ব্যবস্থা রাজ্যের মৎস্য দফতরের।
Read More: ‘এক দেশ এক ভোট’ সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক, সংসদীয় কমিটিকে জানালেন আইন কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান
সোমবার বিধানসভায় আমতার বিধায়ক সুকান্ত পালের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের মৎস্য দফতর লিখিতভাবে এ বিষয়ে জানায়। তাতে বলা হয়েছে, লালবাগ থেকে কাটোয়া হয়ে গোদাখালি পর্যন্ত ইলিশ(Hilsa) করিডর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইলিশ ধরা থেকে বাজারে বিক্রি করা, সবেতেই নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। নিয়ম ভাঙলে শাস্তি ও জরিমানা দুইয়েরই ব্যবস্থা থাকছে। মৎস্য দফতর জানিয়েছে, বর্তমানে রাজ্যের ইলিশ মাছের চাহিদা ও জোগানের মধ্যে ফারাক প্রায় ৪,৭১৫ মেট্রিক টন। ফারাক পূরণে সমুদ্রই একমাত্র ভরসা। কিন্তু সমস্যা হল, সমুদ্রের ইলিশে পদ্মা বা রূপনারায়ণের মতো স্বাদ নেই। এই পরিস্থিতিতে রূপনারায়ণে ইলিশের আনাগোনা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।
ইলিশের প্রজনন এবং বংশবৃদ্ধির জন্য ২টি পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য। প্রথমত, প্রতি বছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন, ৬১ দিন ইলিশ-সহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। দ্বিতীয়ত, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে পূর্ণিমার পাঁচদিন আগে এবং পাঁচদিন পরে ইলিশ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। লিখিত উত্তরে তৃণমূল বিধায়ককে জানানো হয়েছে, ইলিশকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তাদের বংশবৃদ্ধির প্রক্রিয়া সুনিশ্চিত করতে উপকূলের ১২ নটিকাল মাইল পর্যন্ত মহাদেশীয় ঢালে তলদেশীয় ট্রলি বা টানা জাল ব্যবহার করা যাবে না।

ইলিশ বাঁচাতে ইলিশের করিডরকে চিহ্নিত করেছে নবান্ন। লালবাগ থেকে ফরাক্কা পর্যন্ত প্রথম অংশ, কাটোয়া থেকে হুগলিঘাট পর্যন্ত দ্বিতীয় অংশ, ডায়মন্ড হারবার নিশ্চিন্তপুর-গোদাখালি পর্যন্ত তৃতীয় অংশ, চতুর্থ অংশ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে ফরাক্কা ব্যারেজের পাঁচ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল। সুন্দরবন অঞ্চলের মাতলা, রায়মঙ্গল ও ঠাকুরান নদীর পাঁচ কিলোমিটারব্যাপী সৈকত অঞ্চল ছয় নম্বর অংশ।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1901961377411158114
ওই লিখিত উত্তরে বলা হয়েছে, প্রতি বছর জুন থেকে আগস্ট এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ। ফরাক্কা ব্যারেজের ৫ কিলোমিটার অঞ্চল পর্যন্ত সারা বছরই ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ। পাশাপাশি ইলিশ সংরক্ষণের জন্য আরোপ করা হয়েছে একাধিক নিষেধাজ্ঞা। এর মধ্যে অন্যতম হল-
১) ২৩ সেন্টিমিটারের কম মাপের ইলিশ ধরা বা বাজারে বিক্রি করা বা পরিবহণ করা যাবে না।
২) ৯০ মিলিমিটারের কম মাপের ফাঁস জাল ব্যবহার করে ইলিশ ধরা যাবে না
৩) প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশের পরিযায়ী পথের উপর খোলে জাল, সংগ্রাহক জাল, ছোট মাপের ফাঁস জাল ব্যবহার করা যাবে না।