প্রতিবেদন : মোদী সরকার ক্ষমতার আসার পর থেকেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে জনসাধারণের বাকস্বাধীনতা। কেন্দ্রের শাসকদলের বিরোধিতা করার মাশুল গুনতে হয়েছে অনেককেই। বাদ যায়নি সংবাদমাধ্যম। রাষ্ট্রীয় রক্তচক্ষুর কবলে পড়ে প্রাণহানিও হয়েছে সাংবাদিকদের। এবার ফের সেই ছবি ফুটে উঠল বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশে।(Uttarpradesh)
Read More: উচ্চ রক্তচাপের জাল ওষুধ, কড়াকড়ি ব্যবস্থা নিয়ে নির্দেশিকা জারি স্বাস্থ্য দফতরের
হাড়-হিম করা ঘটনাটি যোগীরাজ্যের সীতাপুরের। ধান কেনায় কেলেঙ্কারি এবং জমি বিক্রির ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প দুর্নীতি নিয়ে একাধিক খবর করছিলেন এক সাংবাদিক। প্রতিহিংসার জেরে এবার সেই সাংবাদিককেই রাস্তার ওপর গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিল বিজেপির মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা! নিহত সাংবাদিকের নাম রাঘবেন্দ্র বাজপেয়ী। এদিন হাইওয়ের ওপর তাড়া করে খুন করা হয় এই সাংবাদিককে।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1899411189374828784?s=19
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, শনিবারের এই ঘটনার পর দুদিন পার হয়ে গিয়েছে। তবু কাউকে গ্রেফতার করেনি যোগীর পুলিশ। সাংবাদিকের এই মর্মান্তিক পরিণতিতে দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। উত্তরপ্রদেশের(Uttarpradesh) তরুণ সাংবাদিক কী দুর্নীতির খবর করেই সরকারের রোষের মুখে পড়লেন? দুর্নীতি ফাঁস করার জন্যই কী সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে? উঠছে প্রশ্ন।
দৈনিক জাগরণের স্থানীয় সাংবাদিক ছিলেন ৩৫ বছর বয়সী রাঘবেন্দ্র। কিছুদিন আগেই সরকারের তরফে ধান কেনা এবং জমি দুর্নীতি নিয়ে বেশ কয়েকটি খবর করেছিলেন। রাঘবেন্দ্রর পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁর কাছে হুমকি ফোন আসছিল। যদিও তারপরেও রাঘবেন্দ্র ওই সংক্রান্ত খবর করা বন্ধ করেননি। এর ফলেই রীতিমত অস্বস্তিতে পড়েছিলেন প্রভাবশালীরা। ৮ই মার্চ দুপুরে বাইকে চড়ে সীতাপুর-দিল্লি ন্য়াশনাল হাইওয়ে দিয়ে যাচ্ছিলেন রাঘবেন্দ্র। হেমপুর রেলওয়ে ক্রসিংয়ের কাছে, একটি বাইকে চড়ে তাঁকে তাড়া করে দুষ্কৃতীরা। প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তার ওপরই রাঘবেন্দ্রকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়। তিনটি গুলি লাগে বুকে, কাঁধে। এরপরেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
স্থানীয়রা দ্রুত রাঘবেন্দ্রকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে বাঁচানো যায়নি তাঁকে। পুলিশে অভিযোগ জানানোর পর পেরিয়ে গেছে দুটো দিন। কিন্তু গ্রেফতারি হয়নি কারোরই। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের দুদিন পরও কেন দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে পারল না উত্তরপ্রদেশ(Uttarpradesh )পুলিশ? উত্তরপ্রদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা তাহলে কোথায়? এভাবেই কী খুন করে সংবাদমাধ্যেমের কণ্ঠরোধ করা হবে বারবার ? সদুত্তর মেলেনি যোগী সরকারের কাছে।
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ জার্নালিস্টস (আইএফজে) এবং এর সহযোগী সংস্থাগুলি, ইন্ডিয়ান জার্নালিস্টস ইউনিয়ন (আইজেইউ) এবং ন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্টস – ইন্ডিয়া (এনইউজে-আই) এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং কর্তৃপক্ষকে এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত এবং সুষ্ঠু তদন্ত পরিচালনা করার দাবি জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, যোগীরাজ্যে(Uttarpradesh) গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভকে আক্রমণের ঘটনা এই প্রথম নয়। কর্তব্য পালনের এহেন ভয়াবহ মূল্য আগেও চোকাতে হয়েছে সাংবাদিকদের। চাপের মুখে যোগীর পুলিশ এই নৃশংস হত্যার অভিযোগে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। অভিযুক্তদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য মাহোলি এবং সীতাপুর জেলার পার্শ্ববর্তী শহরগুলিতে চারটি দল গঠন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও আসেনি কোনওরকম গ্রেফতারির খবর।