প্রতিবেদন : নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, বরাবরের মতো নোংরা ভোট-রাজনীতির খেলা শুরু করেছে বিজেপি। জনসংখ্যার বিন্যাসকে হাতিয়ার করে দেশের হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলিতে লোকসভার আসন বাড়ানোর ছক কষছে তারা। উত্তর ও মধ্য ভারতের যেসব রাজ্যে বিজেপি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী, সেখানে আসন বাড়িয়ে বিরোধীশাসিত দক্ষিণ ভারতের রাজ্য এবং বাংলা-সহ কিছু রাজ্যকে টার্গেট করছে গেরুয়া শিবির।
পাশাপাশি ‘এক দেশ এক ভোট’-এর মতো সীমানা পুনর্বিন্যাস নীতিকেও রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের কৌশল নিয়েছে মোদীর দল। এর কড়া বিরোধিতায় সরব হয়েছেন বিরোধীশাসিত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন।(M K Stalin) এই ইস্যুতে একাধিক মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়ে সীমানা নির্ধারণ নিয়ে ঐক্যবদ্ধ বিরোধিতার ডাক দিয়েছেন তিনি।
Read More: তালিকা থেকে কীভাবে সরানো হবে ‘ভূতুড়ে’ ভোটার? – উত্তর চাইতে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে তৃণমূল
স্ট্যালিন(M K Stalin)দক্ষিণ ও পূর্ব ভারতের মুখ্যমন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যে,তাঁরা যেন একযোগে সীমা পুনর্নির্ধারণ (ডিলিমিটেশন) প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে একটি ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট গঠন করেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, যদি এই প্রক্রিয়া আগামী জনগণনার ভিত্তিতে সম্পন্ন হয়, তবে এটি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সফল রাজ্যগুলিতে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির প্রতিনিধিত্বকে গুরুতরভাবে দুর্বল করে দেবে। একাধিক মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সীমানা পুনর্নির্ধারণ পরিকল্পনাকে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর একটি মৌলিক আক্রমণ বলে উল্লেখ করেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী।

স্ট্যালিন লিখেছেন, “ভারতের গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি তার যুক্তরাষ্ট্রীয় চরিত্র। এটি এমন একটি ব্যবস্থা, যা প্রতিটি রাজ্যকে তার যথাযথ কণ্ঠস্বর প্রদান করে, একইসঙ্গে আমাদের পবিত্র জাতীয় ঐক্যকে সম্মান জানায়। আজ আমি জরুরি পরিস্থিতিতে লিখছি, কারণ এই ভারসাম্য এখন এক গভীর সংকটের মুখোমুখি, যা আমাদের মতো রাজ্যগুলির জাতীয় ভবিষ্যৎ গঠনে প্রভাব খাটো করে দিতে পারে।”
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1898354449351070047
প্রসঙ্গত, গত ৫ মার্চ তামিলনাড়ু সরকার একটি সর্বদলীয় বৈঠকের আয়োজন করে, যেখানে শাসক দল ডিএমকে থেকে শুরু করে বিরোধী এআইএডিএমকে, কংগ্রেস এবং বাম দলগুলি রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে একত্রিত হয়ে ভারতের গণতন্ত্রে তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বের উপর সরাসরি আক্রমণ নিয়ে সরব হয়। স্ট্যালিনের বিরোধিতার মূল কারণ, তামিলনাড়ু এবং অন্যান্য রাজ্য, যারা গত কয়েক দশক ধরে পরিবার পরিকল্পনা নীতি অত্যন্ত সফলভাবে বাস্তবায়িত করেছে, তারাই এখন সংসদে আসন হারানোর মুখে দাঁড়িয়ে। অন্যদিকে হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলি, যেগুলি বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত, সেখানে ডিলিমিটেশন হলে অতিরিক্ত আসন যুক্ত হবে। ফলত লোকসভা ভোটে গেরুয়া শিবির বাড়তি সুবিধা পেতে পারে।