কলকাতা : আলুর পাশাপাশি পেঁয়াজ উৎপাদনেও রেকর্ড অঙ্ক স্পর্শ করেছে বাংলা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উদ্যোগেই পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে রাজ্য। আর এবার চালু হতে চলেছে পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থাও। সে কারণেই সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন জেলায় তৈরি করা হচ্ছে বড় ও ছোট মাপের পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার।
এই মর্মে সম্প্রতি নবান্নে একটি পর্যালোচনা বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সেই বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এতদিন বেসরকারি মালিকানায় পেঁয়াজ সংরক্ষণ হত। আর সে জন্য ভর্তুকি দিত রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়ানোর ব্যাপারে যেমন তৎপরতা শুরু হয়, তেমনই বাংলার প্রয়োজন না মিটিয়ে বাইরে পেঁয়াজ রফতানি না করার ব্যাপারেও কড়া ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। তার ফলে পেঁয়াজে জোগান বাড়ে রাজ্যে। আর ভিনরাজ্য থেকে পেঁয়াজ আমদানির উপর নির্ভর করে থাকতে হবে না বাংলাকে।
এবিষয়ে উদ্যানপালন দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায় জানিয়েছেন, এবার রাজ্যে পেঁয়াজের উৎপাদন ৭ লক্ষ টনেরও বেশি হতে চলেছে। গতবছর উৎপাদন হয়েছিল সাড়ে ৬ লক্ষ টন। অনুকূল আবহাওয়াই রাজ্যে পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। বাংলায় পেঁয়াজ সংরক্ষিত হওয়ায় রাজ্যবাসীর প্রয়োজন মিটবে এবং দামও কমবে বলেই আশাবাদী সংশ্লিষ্ট মহল। আর ভিনরাজ্যের খেয়ালের উপর নির্ভর করবে না মূল্য। ইতিমধ্যেই রাজ্যের তরফে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ছোট ও মাঝারি চাষীদের যাতে পেঁয়াজ রাখার সুযোগ দেওয়া যায় সংরক্ষণাগারে।
পাশাপাশি, ১৫ মার্চ থেকে যাতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায় তার ব্যবস্থা করতেও নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। ৪০ টন পেঁয়াজ রাখার মতো ৮টি বড় সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা হয়েছে পাঁচটি জেলায়। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ও কালনা, হুগলির বলাগড় ও আদিসপ্তগ্রাম, মুর্শিদবাদের নওয়াদা ও সাগরদিঘি, নদিয়ার হাঁসখালি এবং মালদহের গাজোলে বড় সংরক্ষণাগার তৈরি করা হয়েছে। ৯০ শতাংশ নির্মাণ ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। এছাড়া ছোট সংরক্ষণাগার হয়েছে ৯১৭টি। সেখানে ৯ টন করে পেঁয়াজ রাখা যাবে। তার মধ্যে ৮৪৯টি তৈরির কাজ শেষ। দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম ও বাঁকুড়া, এই ৯টি জেলায় ছোট সংরক্ষণাগারগুলির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে।