কলকাতা : এবছর আলুর ব্যাপক ফলন হয়েছে বাংলায়। এবার রাজ্য কৃষি বিপণন দফতর এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিল, সরকারি উদ্যোগে চাষীদের কাছ থেকে জ্যোতি আলু কেনার প্রক্রিয়া শুরু হবে ১ মার্চ। তা চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কেনা হবে মোট ১১ লক্ষ টন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের ঘোষণার পরই বুধবার এই পদক্ষেপ নিল রাজ্যের দফতর। একজন চাষের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ কুইন্টাল (৭০ বস্তা) আলু কেনা হবে। প্রতি কুইন্টাল আলুর দাম দেওয়া হবে ৯০০ টাকা (এক কেজি ৯ টাকা)।
মোট ১২টি জেলায় (উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে) আলু কিনবে সরকার। এই জেলাগুলি হল : পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুর। এবার রাজ্যে আলু উৎপাদন ১ কোটি ৪০ লক্ষ টনের অঙ্ক ছোঁবে মনে আশাবাদী রাজ্য। সরকার মনে করছে, এবার অভাবী বিক্রি রুখে দেওয়া যাবে। কারণ চাষীরা কেজি প্রতি ৯ টাকা দাম পাবেন। হিমঘর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চাষীদের কাছ থেকে আলু কিনবে সরকার। কোন চাষীদের কাছ থেকে আলু কেনা হবে, বিডিওদের তত্ত্বাবধানে হিমঘর ভিত্তিক তার তালিকা তৈরি করা হবে। সরকারের কাছে আলু বিক্রয়ে ইচ্ছুক চাষীকে এজন্য আবেদন করতে হবে স্থানীয় বিডিওর কাছে। আবেদনের সঙ্গে দিতে হবে প্রয়োজনীয় নথি।

আবেদনকারী চাষী সব নথি দেবেন তার মধ্যে থাকতে হবে : কৃষক বন্ধু প্রকল্প, কিষান ক্রেডিট কার্ড, জমির নথি এবং বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পে আলুর বিমার কাগজ। আলু কেনার জন্য হিমঘর মালিকদের সমবায় ব্যাঙ্ক বা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। কয়েকবছর আগে একই ব্যবস্থায় হিমঘর মালিকদের মাধ্যমে রাজ্য সরকার চাষীদের আলু কেনার ব্যবস্থা করেছিল। সেই প্রক্রিয়াটি মোটামুটি মসৃণভাবে হয়েছিল বলে জানিয়েছেন এক হিমঘর মালিক।
সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, প্রকল্প ঘোষণার আগে হিমঘর মালিক সংগঠনের সঙ্গে সরকারি শীর্ষ কর্তাদের একদফা আলোচনা হয়ে গিয়েছে। চাষীর কাছ থেকে কেনা আলু ৭ জুন থেকে বিক্রি শুরু করবেন হিমঘর মালিকরা। মোট মজুত আলুর ৫ শতাংশ প্রতি সপ্তাহে বেচতে হবে। বেচার সময় আলুর বন্ডের নির্দিষ্ট দাম কত হবে, তা ঠিক করে দিয়েছে কৃষি বিপণন দফতর। ওই দামের মধ্যে ব্যাঙ্কঋণের উপর ১২ শতাংশ হারে সুদ এবং আসল, হিমঘর মালিকের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ প্রভৃতি ধরা হয়েছে।
উক্ত হিসেব অনুযায়ী প্রতি কুইন্টাল আলুর বন্ডের দাম ঠিক করা হয়েছে ১০৬২ টাকা। বাজারে বন্ডের দাম তার নীচে নেমে গেলে হিমঘর মালিককে সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে। তার জন্য বন্ডের দাম কোন সময়ে কত রয়েছে, তার উপর নজরদারি রাখবে কৃষি বিপণন দফতর। সরকার সরাসরি আলু কিনলে প্রতি কুইন্টালে দেওয়া হবে ১৫০১ থেকে ১৫০৫ টাকা।