নয়াদিল্লি: বিরোধীরা যে সব রাজ্যে ক্ষমতায়, সেখানে দ্রুত নির্বাচন করানোর ব্যাপারে চাপ দেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। এমনকী আইনি পথ নিতেও পিছপা হন না। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে পর্যন্ত তার অন্যথা হয়নি। কিন্তু গেরুয়া শিবির যেখানে ক্ষমতায়, সেই সমস্ত রাজ্যে একেবারে উল্টো ছবি। মহারাষ্ট্র, উত্তরাখণ্ড, মণিপুর এমনকী অসমে পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ে হয়নি পঞ্চায়েত ভোট। কোথাও দু’বছর, আবার কোনও রাজ্যে তিন বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু নির্বাচন হয়নি। বার্ষিক রিপোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছে খোদ মোদি সরকারের পঞ্চায়েত মন্ত্রক।
নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২২ সালে। এখনও পঞ্চায়েত ভোটের আয়োজন করে উঠতে পারেনি মহারাষ্ট্রের জোট সরকার। ফলে খরচ করা যাচ্ছে না কেন্দ্রীয় বরাদ্দও। একনাথ শিন্ডের রাজ্যে পুর নির্বাচন পর্যন্ত আইনি জটে আটকে। দেশের বাণিজ্য রাজধানী মুম্বই যে পুরসভার অধীনে, সেই বৃহন্মুম্বই পুরসভা ২০২০ সাল থেকে চালাচ্ছেন প্রশাসকরা। বিজেপির কোনও হেলদোল নেই।
রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০১১ সাল থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়নি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরিতে। অথচ গত চার বছর ধরে সেখানে ক্ষমতায় রয়েছে এনডিএ। বিজেপি জোট থাকা সত্ত্বেও ভোট করানো যায়নি। আবার কর্ণাটকে বর্তমানে সরকার কংগ্রেসের। তবে এর আগে, ২০১৯ সালে কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকারকে ভেঙে ক্ষমতা দখল করেছিল বিজেপি। সেখানেও ২০২১ সাল থেকে পঞ্চায়েত ভোট বকেয়া পড়ে রয়েছে।
আবার, মহারাষ্ট্র ও মণিপুরে বর্তমান পঞ্চায়েত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে ২০২২ সালে। অসমে ২০২৩ সালেই পঞ্চায়েত ভোট করার সময় ছিল। কিন্তু তা এখনও আয়োজন করে উঠতে পারেনি জোট সরকার। সময়সীমা পিছোতে পিছোতে আগামী এপ্রিল মাসে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। একইভাবে গত বছর উত্তরাখণ্ডে নির্বাচিত পঞ্চায়েত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। বিজেপি শাসিত সেই রাজ্য পর্যন্ত এখনও এই ভোট করে উঠতে পারেনি। এছাড়া তালিকায় নাম আছে আরও দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাক্ষাদ্বীপ, লাদাখের। তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানাতেও পঞ্চায়েত ভোট বকেয়া।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, স্থানীয় স্তরে গ্রাম পঞ্চায়েত ভোটে বিরূপ ফল হতে পারে ধরে নিয়েই সম্ভবত ভোট করাতে সাহস পায়নি ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলি। মণিপুরে বিজেপি জোট ক্ষমতায় ছিল। গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে ওই রাজ্যে অশান্তি লেগে রয়েছে। বর্তমানে সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি। আবার, বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, দেশের সংবিধান কি আদৌ তাঁর জমানায় নিরাপদ? যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে সম্মান জানানোর প্রয়োজনীয়তা তাঁর সরকার বোধ করে তো! এই মর্মে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।