কলকতা : সোমবার ধনধান্য অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভা থেকে একাধিক ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি জানিয়ে দিলেন, ভিআইপি-র গাড়ি বলে আলাদা সুবিধা মিলবে না। যত বড় কর্তাব্যক্তিই হন না কেন, সাধারণ মানুষের মতো সিগন্যালে দাঁড়াতে হবে মন্ত্রী-আমলা-সরকারি আধিকারিকদের।
এদিন নিজের উদাহারণ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “আমি কখনও পুলিশকে বলি না, আমার গাড়ি গেলে একটাও গাড়ি আটকাবে। আমি পছন্দ করি ট্রাফিক জ্যামে দাঁড়িয়ে থাকতে।” মুখ্যমন্ত্রীর জনসংযোগ সর্বজনবিদিত রাজনীতির আঙিনায়। শহরে জেলায় যেখানেই তিনি যান ভিড় জমে যায়। সেই ভিড়ে মিশে যেতে ভালবাসেন তিনি। নমস্কার ও শুভেচ্ছা জানান রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের প্রতি।
সোমবার মঞ্চে যখন বক্তব্য রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী, পাশে ছিলেন পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা, ডিজি রাজীব কুমার, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলায় কোনও ভিআইপির জন্য গাড়ি বন্ধ থাকবে না। বিগত বাম আমলে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু-বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয় যাওয়ার সময় আটকে দেওয়া হত রাস্তা। যতক্ষণ না ‘ভিআইপি’ পাস করছেন, দাঁড়িয়ে থাকতে হত সাধারণ মানুষকে।
মমতার কথায়, “আর পাঁচজন সাধারণ মানুষ যদি ট্র্যাফিক সিগনালে দাঁড়াতে পারে, আমিও পারব। আমি কোনও হরিদাস নই। আমি পছন্দ করি সাধারণ মানুষের মতো চলতে।” মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “কেউ কেউ ট্রাফিক সিগনালে অতি ব্যস্ততা দেখায়। আমার এটা ভাল লাগে না। আমি বলতে বলতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছি। একজন ভিআইপি যাবে বলে অন্য গাড়ি বন্ধ করে দিয়ে সাধারণ মানুষকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা উচিৎ নয়। মনে রাখবেন সবারই কাজ থাকে।”
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, “যদি সবাই সিগনাল মানে তাহলে গ্রিন করিডর করার প্রয়োজন পড়ে না। শুধু লক্ষ রাখবেন রাস্তার ক্রসিংগুলোয় যেন দুর্ঘটনা না ঘটে।” পাশাপাশি, এদিন প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারজন্য সমস্ত বিধায়ক-সাংসদদের তহবিলের টাকা দিতে অনুরোধ করেছেন। “বিধায়ক-সাংসদদেরও সামাজিক কর্তব্যবোধ আছে। এটা একসময় আমিও করেছি। আজ যে ট্রাফিক স্ট্যান্ডে গান হয়, দক্ষিণ কলকাতার একাধিক সুদৃশ্য বাস স্ট্যান্ড, স্কুলের বাইরে অভিভাবকদের বসার জায়গা, শ্মশানের বাইরে সৌন্দর্যায়ন-এগুলো আমি এমপি ল্যাডের টাকা থেকে করেছিলাম। এখন সরকারি ভাবে হয়”, জানান মমতা।