চম্পাহাটি: মহারাষ্ট্র ও দিল্লির মতো বুথ স্তরে ‘ভুয়ো ভোটারে’র অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে (মাইক্রোম্যানেজ) কারচুপির ছক কষছে একটি ‘ভূতুড়ে পার্টি’। ব্যাপক মাত্রায় বহিরাগতদের নাম ভোটার তালিকায় ঢুকিয়ে বুথস্তর থেকে ফলাফল নিজের পক্ষে করতে মরিয়া তারা। এমনই দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সেই শঙ্কাই সত্যি হল এবার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে চম্পাহাটি পঞ্চায়েতের ভোটার তালিকা স্ক্রুটিনি পর্বেই মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা যে ভুল নয় তা প্রমাণিত হল।
দেখা গিয়েছে, লোকসভা ভোট পর্বে চম্পাহাটি পঞ্চায়েতের ভোটার সংখ্যা ছিল সাড়ে ১৮ হাজারের কিছু বেশি। লোকসভা ভোটের পর মাত্র সাত মাসে গ্রামীণ এলাকার এই পঞ্চায়েতে ভোটার বেড়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার। এই পরিসংখ্যান দেখে সকলের চক্ষু চড়কগাছ! এহেন ‘অনুপ্রবেশ’ কিন্তু চম্পাহাটির মানুষের নয়। মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং শিলিগুড়ির মতো উত্তরবঙ্গের এলাকার বাসিন্দারা নাম তুলেছে সেখানকার ভোটার তালিকায়। কিন্তু এই অনুপ্রবেশের জেরেই মাত্র সাত মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২,৪০০-এ। ২২টি গ্রাম সংসদের মধ্যে কোনও বুথে ২০০, আবার কোনও বুথে ৩০০ ভোটার বেড়েছে।

ভোটার তালিকায় দেখা যাচ্ছে, একই ফোন নম্বর ব্যবহার করে নাম ঢুকেছে চার-পাঁচজনের।মহারাষ্ট্র এবং দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনপর্বে সামনে এসেছিল, কীভাবে মাত্র কয়েক মাসে লক্ষ লক্ষ ভোটার বেড়েছিল সেখানে। দিল্লির ক্ষেত্রে দেখা যায়, পার্শ্ববর্তী গাজিয়াবাদ, নয়ডা ও গুরুগ্রামের লোকজনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সেখানকার ভোটার তালিকায়। এই বিষয়টিকেই বিজেপির গোপন এজেন্ডা বলে দাবি করেছেন মমতা।
চম্পাহাটি পঞ্চায়েতের ভোটার তালিকা স্ক্রুটিনি করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, এই পঞ্চায়েতের ৪১ নম্বর বুথে গত লোকসভা নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ১০৫৩। এবার তা বেড়ে হয়েছে ১৩৫৭। আবার ২৬ নম্বর বুথে লোকসভা পর্বে ভোটার ছিল ৭৪৬ জন। নতুন ভোটার তালিকায় অতিরিক্ত ১৬৯ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বাড়তি ভোটারদের সিংহভাগই এই পঞ্চায়েতের বাসিন্দা নন। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের তরফে খোঁজখবর করে শনকা মাঝি নামে নতুন অন্তর্ভুক্ত এক ভোটারের ফোন নম্বর মিলেছিল। তাতে যোগাযোগ করা হলে, মালদহের এক যুবক ফোন ধরে। মালদহে তাঁর একটি সাইবার কাফে রয়েছে। এতেই এই ভূতুড়ে ভোটার নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে।