জয় দিয়েই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-অভিযান শুরু করল ভারত। বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে বাংলাদেশকে ছয় উইকেটে হারাল টিম ইন্ডিয়া। পাঁচ উইকেট নিলেন মহম্মদ শামি। যশপ্রীত বুমরার অনুপস্থিতিতে যা স্বাভাবিকভাবেই ভরসা জোগাচ্ছে ভারতকে। আর ব্যাটিং-বিভাগে অব্যাহত রইল শুভমন গিলের দুরন্ত ছন্দ। ইংল্যান্ড সিরিজের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও সমান সাবলীল তিনি। অপরাজিত শতরান এল তাঁর ব্যাট থেকে। সেঞ্চুরি করলেন বাংলাদেশের তরুণ ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়ও।
এদিন টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। বড় রান তুলে ভারতকে চাপে রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তা আর হল কই? মহম্মদ শামি-হর্ষিত রানার পেস-আক্রমণে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশ। কোনও রান না করেই প্যাভিলিয়নে ফেরত যান সৌম্য সরকার ও শান্ত। খানিক পরে ফেরেন মিরাজও। কিছুটা প্রতি-আক্রমণ করলেও ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি তানজিদ। অক্ষর প্যাটেল এসে তুলে নেন তাঁর উইকেট। ঠিক পরের বলে মুশফিকুর রহিমকেও আউট করেন অক্ষর। তৈরি হয় হ্যাটট্রিকের সুযোগ। সেই মাইলস্টোন প্রায় স্পর্শই করে ফেলেছিলেন বাঁহাতি স্পিনার। নতুন ব্যাটার জাকেরের ব্যাট ছুঁয়ে বল চলে যায় স্লিপে থাকা রোহিত শর্মার কাছে। তা তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন অধিনায়ক। ক্যাচ ফসকানোর পর রোহিতের প্রতিক্রিয়া দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, কতটা বিরক্ত ও হতাশ। এরপর তৌহিদের সহজ ক্যাচ ফসকান হার্দিক পাণ্ডিয়াও। একটি স্টাপিংয়ের সুযোগ নষ্ট করেন কে এল রাহুল।
ভারত পরপর এমন সুযোগ হাতছাড়া করায় স্বাভাবিকভাবেই ক্রিজে থিতু হবার সুযোগ পান তৌহিদ ও জাকির। দুজনে মিলে ১৬৪ রান জোড়েন স্কোরবোর্ডে। ৬৮ রানে আউট হন জাকের। তৌহিদ করেন ১০০। ১২ বলে ১৮ রানের দ্রুত ইনিংস খেলেন রিশাদ। শেষপর্যন্ত ২২৮ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। ১০ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুললেন শামি। গড়লেন নতুন নজিরও। ওডিআই ফরম্যাটে দ্বিতীয় দ্রুততম বোলার হিসেবে ছুঁলেন ২০০ উইকেটের মাইলফলক। ডেলিভারির হিসেবে তিনি অবশ্য দ্রুততম। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-অভিষেকেই চমকে দিলেন তরুণ পেসার হর্ষিত রানা। ৭.৪ ওভার বল করে ৩১ রান দিয়ে নিলেন ৩টি উইকেট। বাকি দুটি উইকেট পেয়েছেন অক্ষর।
রান তাড়া করতে নেমে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই ইনিংস শুরু করেন রোহিত শর্মা ও শুভমন গিল। দ্রুত রান তুলছিলেন তাঁরা। ৩৩ বলে ৪১ করে তাসকিনের বলে আউট হল রোহিত। এরপর পিচ খানিকটা মন্থর হওয়ায় সাহায্য পেতে থাকেন স্পিনাররা। রানের গতিও কমে যায়। স্বচ্ছন্দ দেখাল না বিরাট কোহলিকে। ৩৮ বলে ২২ করে আউট হলেন তিনি। ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি শ্রেয়স আয়ার (১৫) ও অক্ষর প্যাটেলও (৮)। তুলে মারতে গিয়ে উইকেট ছুঁড়ে দেন দুজনেই। তবে তাড়াহুড়ো করেননি গিল। ধৈর্যশীল মাথায় ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যান। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন কে এল রাহুলও। তাঁদের ৮৭ রানের অপরাজিত পার্টনারশিপই জয় এনে দেয় ভারতকে। ছয় মেরে ম্যাচ শেষ করেন রাহুল। ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। শুভমন অপরাজিত থাকেন ১০১ রানে। একদিনের ক্রিকেটে নিজের অষ্টম শতরানটি করলেন শুভমন। ম্যাচের সেরাও নির্বাচিত হন তিনি। ২৩ তারিখ, রবিবার এই মাঠেই পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে টিম ইন্ডিয়া। সেই ম্যাচ নিয়ে ইতিমধ্যেই তুঙ্গে ক্রিকেটপ্রেমীদের উত্তেজনা।